
গাজীপুর সংবাদদাতা:
গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় গ্যাসের চোরাই সংযোগ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ১৩ নং ওয়ার্ডের নাওজোড় হোসেন মার্কেটের নিকটস্থ হাজারী সড়কের দুই পাশে সাড়ি সাড়ি বাড়িতে জ্বলছে অবৈধ সংযোগের চুলা।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় আব্দুল বারেক ড্রাইভারের ছেলে মো. সোহেল (৩৫) এর আধাপাকা টিনশেড বাড়িতে গ্যাসের পাইপলাইন ব্যবহার করা যাচ্ছে। প্রায় ৩০-৩৫ কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িটির প্রতিটি কক্ষে আলাদা আলাদা ভাড়াটিয়া পরিবারের বসবাস। এতগুলো পরিবারের চাহিদা পূরণে পুরো বাড়িতে জ্বলছে ৮-১০ টি গ্যাসের চুলা, অথচ নেই একটারও অনুমোদন। জানা যায়, খোলা বাজার থেকে রাইজার কিনে রাতের অন্ধকারে অবৈধ গ্যাসের সংযোগ দিয়ে জ্বলছে এতগুলা চুলা।
সোহেল একা নয়, বরং স্থানীয় আব্দুল হালিম (৪৫), নাসরিন (৪০), ইউসুফ সরদার (৪০), মজনু (৫০) সহ অন্তত ১০টি বাড়িতে অনুমোদন ছাড়াই গ্যাসের পাইপলাইন থেকে চোরাই সংযোগের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় যে সব বাসায় গ্যাস ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে সেখানেও প্রায় প্রতিটি বাড়িতে অনুমোদনের বাইরে অতিরিক্ত চুলা জ্বলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দুইটা বা চারটা চুলার অনুমোদন নিয়ে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে ব্যবহার করা হচ্ছে গ্যাসের পাইপলাইন। ফলে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার গ্যাসের অপচয় ও বিপুল রাজস্ব থেকে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
অভিযোগ রয়েছে, তিতাস গ্যাস গাজীপুর আঞ্চলিক বিপণন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে স্থানীয় একটি চক্র আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে বছরের পর বছর ধরে এভাবে অবৈধ সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে। তবে চক্রটির ব্যাপারে সরাসরি মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, এই অবৈধ সংযোগের পেছনে স্থানীয় আব্দুল বারেক ওরফে বারেক ড্রাইভারের ছেলে সোহেল সহ বেশ কয়েকজনের একটি চক্র কাজ করছে। এর আগে একাধিকবার এই এলাকায় অভিযান চালিয়েছেন তিতাসের কর্মকর্তারা। তথাপি কেন বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ, এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
অবৈধ গ্যাস সংযোগের সাথে সংশ্লিষ্টতায় অভিযুক্ত সোহেলের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
তিতাস গ্যাসের গাজীপুর আঞ্চলিক বিপণন কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহাদাত ফরাজি জানান, অবৈধ সংযোগ বিছিন্নকরণে প্রতিদিন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে শীঘ্রই এখানেও অভিযান চালানোর আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি কোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আসার কিছুদিন পর সেখানে আবারও সংযোগ দেয়া হয় বলে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি।