
দৃষ্টিশক্তিহীন হয়েও থেমে থাকেননি তূর্য। জীবনের আলো হাতে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে লড়ছেন তিনি। গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বড় বাধা নয়।
মো. ইনতেসার ইসলাম তূর্য, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার খিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার (২ মে) ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে। পাশে ছিলেন তার মা—স্কুলশিক্ষিকা মোছা. ইসরাত জাহান। পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল খোঁজখবর নেন তূর্যের।
তূর্যের জন্ম চোখে ছানি নিয়ে। পরবর্তীতে গ্লুকোমা, মেনিনজাইটিসসহ নানা জটিলতায় এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান এবং অন্য চোখেও দেখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিন্তু দমে যাননি। এসএসসি পাস করেন জিপিএ-৫ পেয়ে, পরে এইচএসসিতে পান জিপিএ ৪.৫৮।
তূর্য বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন ছিল, কিন্তু চান্স পাইনি। এখন আশা করছি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবো।”
মা ইসরাত জাহান বলেন, “তূর্য জন্ম থেকেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগেছে। আমি নিজ হাতে ওকে গড়ে তুলেছি। ও শুনে শুনে মুখস্থ করত। কেউ ওর মতো সীমাবদ্ধতায় থেকেও যেন পিছিয়ে না পড়ে—এই বার্তাই দিতে চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. আব্দুর রহিম জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য গুচ্ছের নির্দেশনায় শ্রুতিলেখক নির্ধারণের কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী মেডিকেল সেন্টারে তূর্যের জন্য আলাদা কক্ষে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
এই লড়াকু তরুণের জন্য দোয়া রইল—তাঁর স্বপ্ন পূরণ হোক, প্রেরণা জোগাক অন্যদেরও।