
বরিশাল সদর প্রতিনিধি:
সপ্তাহের ব্যবধানে বরিশালে চালের দাম ২ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিল পর্যায়ে সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকেই ২৫ কেজি বুলেট হাইব্রিড চালের প্রতি বস্তা ১২১০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১৪৪০ টাকা, আঠাশ বালাম ১৫০০ টাকা, এবং মিনিকেট ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের দাবি, বাজারে কার্যকর মনিটরিং না থাকায় দামে এই ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে।
বরিশালের সবচেয়ে বড় পাইকারি চালের বাজার ফরিয়াপট্টিতে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে বুলেট হাইব্রিড প্রতি বস্তা ১১৭০-৮০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১৪২০-৩০ টাকা, আঠাশ বালাম ১৪৭০-৮০ টাকা এবং মিনিকেট ১৬৮০ টাকায় বিক্রি হতো।
জেবিন এন্টারপ্রাইজের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমরা অল্প লাভে চাল বিক্রি করি। মিল পর্যায়ে দাম বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়। মিল পর্যায়ে দাম কমলে আমরাও কম দামে বিক্রি করি।”
হাজি আনোয়ার আড়তের শহিদুল ইসলাম বলেন, “মিল পর্যায়ে সঠিক মনিটরিং থাকলে চালের বাজারে অস্থিরতা থাকত না। আমরা মিল থেকে কিনে এনে বিক্রি করি। মিলে দাম বাড়লে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়বে। মিলে কমলে আমাদের বাজারেও কমবে।”
বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার, নতুনবাজারসহ কয়েকটি মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরেই প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাংলাবাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী জানান, “আমার দোকানে এক সপ্তাহ আগেও আঠাশ বালাম ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০ টাকা, স্বর্ণা ৫২-৫৩ টাকা, মোটা চাল ৮২ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন আঠাশ বালাম ৬২, মিনিকেট ৭২, স্বর্ণা ৫৫, এবং মোটা চাল ৮৫ টাকায় বিক্রি করছি।”
ক্রেতা আরাফাত হোসেন বলেন, “সরকার বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে কোনো কাজই করছে না। মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এখনই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।”
অপর এক ক্রেতা সানজিতা খাতুন জানান, “আশ্চর্যের বিষয়, কোনো সরকারই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।”
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক সুমি রাণী মিত্র জানান, “চালের বাজারে দাম বেড়েছে। খবর পেয়ে গত সপ্তাহেই আমরা ফরিয়াপট্টিতে অভিযান চালাই। বরিশালের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন; তারা মিল থেকে বেশি দামে কিনছেন বিধায় বেশি দামে বিক্রি করছেন। মূলত, মিল পর্যায়ে দাম কমলে বরিশালের বাজারেও দাম কমে যাবে।”