Date: April 29, 2024

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / বিশেষ নিবন্ধ / বাংলাদেশসহ সমগ্র মানবজাতির সংকট ও পরিত্রাণের পথ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

বাংলাদেশসহ সমগ্র মানবজাতির সংকট ও পরিত্রাণের পথ

July 01, 2023 04:04:54 PM   সম্পাদকীয়
বাংলাদেশসহ সমগ্র মানবজাতির সংকট ও পরিত্রাণের পথ

▪ মো. মশিউর রহমান
সমস্ত পৃথিবীতে আজ যুদ্ধ-রক্তপাত, খুন, ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি সংকট- সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের  মধ্য দিয়েই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়ে যেতে পারে। এদিকে লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধশতাব্দি পরও বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার পাঁয়তারা চলছে। একদিকে বিভিন্ন মতাদর্শের উপর গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে হানাহানি ও ক্ষমতা দখলের অসুস্থ প্রতিযোগিতা; অন্যদিকে ধর্মকে ব্যবহার করে চলছে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী গোষ্ঠীর পেশিশক্তির মহড়া, রমরমা ধর্মব্যবসা, গুজব ও হুজুগনির্ভর ধর্মীয় উন্মাদনা। শান্তিকামী মানুষ স্থিতিশীল পরিবেশ ও শান্তি চান, কিন্তু তারা ঐক্যবদ্ধ নন। এ কারণে কোনো সংকটের স্থায়ী সমাধানেই তারা পৌঁছতে পারেন না। 
মুক্তির একমাত্র পথ
কোন পথে গেলে মানুষ অশান্তিতে পড়বে আর কোন পথে গেলে মানুষ শান্তি পাবে এটা তিনিই ভালো জানবেন যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন (সুরা মুল্ক ১৪)। মানুষ যেন ন্যায়, সুবিচার ও শান্তির মধ্যে থাকতে পারে সেজন্য তিনি যুগে যুগে নবী-রসুলদের মাধ্যমে হেদায়াহ বা সঠিক পথনির্দেশনা পাঠিয়েছেন। এর ধারাবাহিকতায় মহান আল্লাহ আরব ভূখণ্ডে শেষ রসুলকে (সা.) পাঠালেন হেদায়াহ ও সত্যদীন দিয়ে। শেষ জীবনব্যবস্থার (দীন) লক্ষ্যই ছিল ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সমগ্র জীবনে মানুষ যেন ন্যায়, সুবিচার, শান্তিতে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা। আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা দিয়েই আজ থেকে দেড় হাজার বছর পূর্বে আল্লাহর শেষ রসুল মোহাম্মদ (সা.) অর্ধ পৃথিবীর মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক তথা সর্বপ্রকার সংকট দূর করেছিলেন। অজ্ঞানতার যুগে আরব সমাজে গোত্রে গোত্রে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সুদ, চুরি-ডাকাতি, নারী-নির্যাতন, দাসপ্রথা, কুসংস্কার, হুজুগ-গুজব, অশ্লীলতা, মাদক, জুয়াসহ যাবতীয় অন্যায় চরম আকার ধারণ করেছিল। এ পরিস্থিতিতে আল্লাহ মহানবীকে (সা.) মানুষের দুর্দশা দূর করার উপায় ও পারলৌকিক মুক্তির পথ প্রদর্শন করলেন। সেটি হচ্ছে ইসলাম। অর্থাৎ মানবজাতিকে আল্লাহর তৈরি জীবনব্যবস্থা ‘ইসলাম’ মেনে চলতে হবে। এজন্য প্রথমে তাদেরকে এই জীবনব্যবস্থার মূলমন্ত্র তওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই তওহীদের অঙ্গীকার হচ্ছে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মোহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ (সা.), অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম-বিধান ছাড়া আর কারো হুকুম মানি না এবং মোহাম্মদ (সা.) তাঁর প্রেরিত রসুল। 
তওহীদের আহ্বান করার সাথে সাথেই আরবের গোত্রপতি ও ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী জনগণকে ইসলাম থেকে ফিরিয়ে রাখতে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়াতে শুরু করল। তাদের হাতে অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করে নবগঠিত জাতিটি একদেহ একপ্রাণ হয়ে মানুষের মুক্তির জন্য আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে গেলেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, সংগ্রাম, কোরবানি ও শাহাদাতের বিনিময়ে আরব উপদ্বীপে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত হল। 
আল্লাহর রসুল (সা.) কেমন সমাজ নির্মাণ করেছিলেন?
আল্লাহর দেওয়া সত্যদীন প্রতিষ্ঠার ফলে সমগ্র আরব উপদ্বীপে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জীবন-সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, আদালতে মাসের পর মাস কোনো মামলা আসত না। রাষ্ট্রের কর্মচারীরা ঘুষ-দুর্নীতি থেকে ছিলেন মুক্ত। মানুষের অভাব দূর হয়ে গেল, মদ্যপান বন্ধ হল, মানুষ সুস্থচিন্তার অধিকারী হল। সালাত, যাকাত, হজ, সওম ইত্যাদি আমলের মাধ্যমে মো’মেনদের ঐক্য, শৃঙ্খলা, আনুগত্য, আত্মিক পরিশুদ্ধি, দানশীলতা, পবিত্রতা, তাকওয়া অর্জন ইত্যাদির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হল। নব্যুয়তের প্রথম ২৩ বছরে সমগ্র আরবে ও পরবর্তী ৬০/৭০ বছরে অর্ধ পৃথিবীতে এই অনাবিল শান্তি প্রতিষ্ঠিত হল। মাত্র এক শতাব্দির ব্যবধানে পৃথিবীর সবচেয়ে অবজ্ঞাত, মূর্খ, অশিক্ষিত, বিশৃঙ্খল, ঐক্যহীন জনগোষ্ঠীটি শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞান-বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে, সামরিক শক্তিতে, ধন-সম্পদে, ঐক্যে, শৃঙ্খলায়, আত্মিক পবিত্রতায়, নতুন নতুন ভূখণ্ড আবিষ্কারে, ন্যায়ের শাসনে পৃথিবীর সকল জাতির শিক্ষকের আসনে আসীন হয়েছিল। সে সময় উম্মতে মোহাম্মদীর দিকে চোখ তুলে তাকানোর হিম্মত কারো ছিল না। দুইটি বিশ্বশক্তি রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্য নবগঠিত মুসলিম জাতির সামনে তুলোর মত উড়ে গিয়েছিল। তাদের এই অভূতপূর্ব বিজয়ের ফলেই সম্ভব হয়েছিল ইসলামের সোনালি যুগ প্রতিষ্ঠা।   
মুসলমানদের পতনের ইতিহাস
দুর্ভাগ্যজনক ইতিহাস হচ্ছে, আল্লাহর রসুল (সা.) ও তাঁর হাতে গড়া জাতিটির সকল সদস্য একে একে চলে যাওয়ার পর একটা পর্যায়ে জাতির আকিদায় বিকৃতি প্রবেশ করতে শুরু করল। সমগ্র পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে রসুলাল্লাহ (সা.) জাতিটি গঠন করেছিলেন, সাহাবিরাও সে লক্ষ্য নিয়ে সংগ্রাম করে অর্ধ-পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করলেন। কিন্তু তারপরে সে লক্ষ্য জাতির সামনে থেকে হারিয়ে গেল। 
জাতির শাসকরা রসুলাল্লাহ ও মহান খলিফাদের আদর্শ ত্যাগ করে, পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বাদ দিয়ে অন্যান্য রাজা-বাদশাহদের মতই সীমাহীন ভোগবিলাসে ডুবে গেলেন। অর্ধ-পৃথিবী বিস্তৃত মুসলিম ভূখণ্ড বহু রাজ্যে বিভক্ত হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ল। ভোগবিলাসী সুলতান ও আমিরদের অবৈধ কাজের অনুমোদন দেওয়ার জন্য সৃষ্টি হল দুনিয়ালোভী আলেম সমাজ। আরও জন্ম নিল অতি পণ্ডিত শ্রেণি। তারা দীনের ছোটখাটো, অপ্রয়োজনীয় ও অনর্থক বিষয় নিয়ে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, অতি বিশ্লেষণ, চুলচেরা বিশ্লেষণ, তর্ক-বাহাস, মারামারিতে লিপ্ত হলেন। তাদের বাড়াবাড়ির পরিণামে জাতি শত শত মাজহাব, ফেরকা তরিকায় বিভক্ত হয়ে গেল। অপরদিকে পারস্যের দিক থেকে জাতির মধ্যে বিকৃত সুফিবাদ প্রবেশ করে জাতিকে অন্তর্মুখী, সংগ্রামবিমুখ বানিয়ে দিল। প্রচণ্ড গতিশীল বিস্ফোরণমুখী জাতি গতি হারিয়ে প্রাণহীন স্থবির হয়ে গেল। শুরু হল পরাজয়ের পালা। এই সাবধান বাণী আল্লাহ কোর’আনে করেছেন- যদি তোমরা আমার রাস্তায় সংগ্রামে বের না হও, তবে অন্য জাতিকে চাপিয়ে দেব (সুরা তওবা ৩৯)। যখন ইউরোপের খ্রিষ্টান, মঙ্গোল ও তাতারদের আক্রমণ শুরু হল তখন তা রুখবার মত ঐক্য, শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব বা সাহস কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। পুরো মুসলিম বিশ্বই একটা পর্যায়ে ইউরোপের ছোট ছোট খ্রিষ্টান জাতিগুলোর কাছে পরাজিত হয়ে গেল। তখন তারা তাদের আইন, বিধান, আমলাতন্ত্র, শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। আজও তাদের তৈরি বিধি-ব্যবস্থা দিয়ে আমাদের সমগ্র জীবন পরিচালিত হচ্ছে, আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা দিয়ে নয়। 
ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সংঘাতের কারণ:
প্রায় তিন শতাব্দি আগে যখন আমাদের এই উপমহাদেশ ব্রিটিশের উপনিবেশে পরিণত হয় তখন তারা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে স্থায়ীভাবে পদানত করে রাখার পরিকল্পনা করে। জাতি যেন কোনোদিন ইসলামের আদর্শে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে সেজন্য তারা মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় দীর্ঘ ১৪৬ বছর ধরে খ্রিষ্টান পণ্ডিতদের তৈরি সিলেবাস ও কারিকুলাম দিয়ে একাদিক্রমে ২৭ জন খ্রিষ্টান পণ্ডিত অধ্যক্ষপদে থেকে সেই বিকৃত, বিপরীতমুখী ইসলাম এ জাতিকে শিক্ষা দিয়েছেন। সে সিলেবাসে জাতীয় জীবনের অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে গুরুত্বহীন করে ব্যক্তিগত জীবনের খুঁটিনাটি মাসলা-মাসায়েল, দোয়া-কালাম, আনুষ্ঠানিক ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানকে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্ক করে ফেরকা ও মাজহাবগত বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে সেই বিষয়গুলো সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেন জাতি আর কোনোভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে। পরিণামে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে আসা শ্রেণিটি- যাদেরকে আমরা আলেম মওলানা বলে সম্মান করি, তারা কিন্তু ওয়াজের মাঠে, মসজিদে বিভিন্ন ছোটখাটো বিষয়ের মাসলা-মাসায়েল নিয়ে ফেরকা মাজহাবের কূটতর্কে লিপ্ত হয়ে আছেন। এক আলেম আরেক আলেমকে অবমূল্যায়ন করেন, কাফের মুরতাদ ফতোয়া দেন, গালিগালাজ পর্যন্ত করেন, আরেক মতাদর্শের অনুসারীদের উপর হামলার উস্কানি দেন, হুঙ্কার দেন, ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদেরকে উত্তেজিত করেন, অপ্রয়োজনীয় অনর্থক বিষয় নিয়ে একে অপরের সঙ্গে গলার রগ ফুলিয়ে বাহাস করেন। অথচ তাদের দায়িত্ব ছিল জাতিকে আল্লাহর তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করে আল্লাহর দেওয়া দীনুল ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা এবং আল্লাহর হুকুম-বিধান মোতাবেক জাতিকে পরিচালিত করা দুনিয়ার অপরাপর জাতির থেকে মুসলমানদেরকে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, সামরিক শক্তিতে এক কথায় সর্বদিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত করা। কিন্তু বাস্তবে সেটা তো তারা করছেনই না, উল্টো তারা নিজেদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করার জন্য নানা উপায়ে দীনকে ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করে চলেছেন, এক কথায় ধর্মব্যবসা করে যাচ্ছেন। ব্রিটিশদের তৈরি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কর্মমুখী বা প্রযুক্তিগত (ঠড়পধঃরড়হধষ) কোনো শিক্ষা দেওয়া হয়নি। এটা ছিল তাদেরকে সাহসহীন, পরনির্ভরশীল জনগোষ্ঠীতে পরিণত করার ব্রিটিশ চক্রান্ত। 
অপরদিকে সাধারণ সেক্যুলার শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রেণি তাদের পূর্বতন প্রভুদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সরকার ব্যবস্থার অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে হাজারো দল-উপদলে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে আছে। তারাও একে অপরের কার্যালয়ে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে, প্রতিপক্ষকে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করে, পিটিয়ে মারে, পরস্পরের উপর প্রতিশোধ নিতে দেশের সম্পদ ধ্বংস করে। তাদেরকে মুসলমানের সন্তান হিসাবে কোর’আন হাদিস থেকে ন্যূনতম নৈতিক শিক্ষাও দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ভোগবিলাসী জীবনের জন্য অর্থ উপার্জনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। তারা হয়ে উঠেছে মানবতাহীন, দেশপ্রেমহীন, চরম দুর্নীতিপরায়ণ। স্বদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিতে তাদের বুক কাঁপে না। 
এ অবস্থায় সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে, দুর্ভি¶ ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। দিনকে দিন সামাজিক অপরাধ, নিরাপত্তাহীনতা আরো বাড়বে, বৈদেশিক নির্ভরশীলতা ও খবরদারি আরও বাড়বে। এখন আমরা যদি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকি তাহলে আমাদেরকেও আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাকের পরিণাম ভোগ করতে হবে।
হেযবুত তওহীদের আহ্বান
অনিবার্য ধ্বংস থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে অনুধাবন করতে হবে যে, আমরা আল্লাহর দেখানো সহজ-সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছি, সত্যদীন ত্যাগ করেছি। তাই আমাদেরকে আবার সেই তওহীদ ভিত্তিক সত্যদীন, জীবনব্যবস্থা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের আল্লাহ একজন, রসুল একজন, ঐশী কেতাব একটি, এক কেবলা; সুতরাং আমাদের জাতিও হবে একটি, নেতা হবে একজন। আমাদের মধ্যে এত ফেরকা মাজহাব তরিকার দ্বন্দ্ব সংঘাত থাকতে পারে না। আল্লাহর রসুল (সা.) যেভাবে জাতিটিকে কলেমা-তওহীদের ভিত্তিতে ইস্পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, ঠিক সেভাবেই আমাদেরকেও সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে একজন নেতার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দীন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে।
আমরা হেযবুত তওহীদ বিগত ২৮ বছর ধরে মানুষকে তওহীদের ভিত্তিতে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান করে যাচ্ছি; এ লক্ষ্যে আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি, গুজব, হুজুগ, সাম্প্রদায়িকতা, নারী নির্যাতন, মাদক ইত্যাদির বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ জনসচেতনতামূলক সভা, সেমিনার, পথসভা ইত্যাদি করেছি। এছাড়া পত্রিকা, বই, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, অনলাইনে প্রচার করে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের আহ্বান মানুষের কানে পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপনিও মানুষ হিসেবে আপনার জীবনের আসল লক্ষ্য খুঁজে পান এবং উম্মতে মোহাম্মদী হিসাবে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিন- এই শুভকামনা।
 

[লেখক: সভাপতি, রংপুর বিভাগ, হেযবুত তওহীদ; যোগাযোগ: ০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১৫৭১৫৮১, ০১৭১১০০৫০২৫]