
রায়পুরা সংবাদদাতা, নরসিংদী:
রাস্তার ধারে, ঝোপঝাড়ে অনাদরে বেড়ে ওঠা এক অনন্য উদ্ভিদ ভাট ফুল। সবুজ বহুপত্রী ভাট গাছের ধবধবে সাদা ফুল থোকায় থোকায় ফোটে, যার গোড়ার অংশ হালকা বেগুনি রঙের। শুধু সৌন্দর্য নয়, এই ফুলের রয়েছে নানা ঔষধি গুণ। পাশাপাশি এটি শিশুদের খেলাধুলার সামগ্রী হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়।
ঋতুরাজ বসন্ত মানেই নানা বর্ণের ফুলের আগমন। গ্রামবাংলার পরিচিত উদ্ভিদগুলোর মধ্যে ভাট ফুল অন্যতম। বিভিন্ন অঞ্চলে এটি ‘কইকোচা ডাল’ নামেও পরিচিত। একসময় গ্রামীণ জনপদে প্রচুর পরিমাণে ভাট গাছ দেখা গেলেও বর্তমানে ঝোপঝাড় কেটে ফেলা ও বন-জঙ্গল নিধনের ফলে এর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। রাস্তা সংস্কারের কাজও ভাট গাছের অস্তিত্ব সংকটে ভূমিকা রাখছে।
ভাট ফুল শুধু দেখতেই নয়, এটি মানবদেহের জন্যও উপকারী। বিষাক্ত কীটপতঙ্গের কামড়ে এ ফুলের রস ক্ষতস্থানে দিলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। অনেকে কৃমি দূর করতে ভাট ফুলের রস পান করেন। চর্মরোগ নিরাময়ে এ ফুলের রস নিয়মিত ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। গরু-ছাগলের উকুন দূর করতে ভাট গাছের পাতা বেটে শরীরে লাগানো হয়।
ভাট গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা পান পাতার মতো খসখসে। ডালের শীর্ষে একের পর এক ফুল ফোটে। ফুলের পাপড়ির রঙ সাদা, তবে কলির অগ্রভাগ হালকা বেগুনি। রাতে এ ফুলের সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যা প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে।
পথচারীরা জানান, রাস্তার ধারে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এই ফুলের গাছ সার কিংবা ওষুধ ছাড়াই টিকে থাকে। অনেকেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন, কেউ কেউ গাড়ি থামিয়ে সেলফি তোলেন। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভালোবেসে ফুল সংগ্রহ করে। তবে যথাযথ পরিচর্যা ও সংরক্ষণের অভাবে এই অপূর্ব ফুল বিলুপ্তির পথে।
প্রাকৃতিক এই সম্পদ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। ভাট ফুল শুধু পরিবেশের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং এটি আমাদের ঐতিহ্যেরও অংশ।