
নিজের দিনে লিওনেল মেসি কতটা ভয়ঙ্কর, আরও একবার তার সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব। বল পায়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। সঙ্গে জোড়া গোলের আলো ছড়ালেন তরুণ হুলিয়ান আলভারেস। ক্রোয়েশিয়াকে গুঁড়িয়ে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল লিওনেল স্কালোনির দল।
লুসাইল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে প্রথম সেমি-ফাইনালে গোল করলেন মেসি, করালেনও। একই সঙ্গে গড়লেন কয়েকটি রেকর্ড। মেসিময় ম্যাচে ৩-০ গোলের জয়ে শিরোপা লড়াইয়ে উঠল আর্জেন্টিনা।
শুরুতে দলকে এগিয়ে নেন মেসি, এরপর প্রথমার্ধেই ব্যবধান বাড়ান হুলিয়ান আলভারেস। বিরতির পর আরও এক গোল করে জয় নিশ্চিত করেন ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরোয়ার্ড। দুই দলই ম্যাচ শুরু করে রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে। ক্রোয়েশিয়া শুরুতে আর্জেন্টাইন রক্ষণে হানা দিলেও কার্যকর কোনো শট নিতে পারছিল না। উল্টো গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণে উঠতে শুরু করে আর্জেন্টিনা। এর ফলও আসে ৩৪তম মিনিটে। বল নিয়ে গোলমুখে ছুটতে থাকা হুলিয়ান আলভারেজকে ঠেকাতে গিয়ে বক্সেই ফাউল করে বসেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজালেন রেফারি। সেখান থেকে সফল স্পট কিকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপে এটা তার ১১তম গোল।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে বিশ্বকাপে এখন সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক তিনি। আগের ম্যাচে গোল করে তিনি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন গাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। এবার সাবেক ফরোয়ার্ডকে ছাড়িয়ে গেলেন মেসি। তার ওই গোলে বড় ধাক্কা খায় ক্রোয়েশিয়া। কারণ রক্ষণ কিছুটা ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে। আর সেই সুযোগে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। ৩৯তম মিনিট মাঝমাঠ থেকে মেসি বল বাড়িয়ে দেন প্রতিপক্ষের বক্সের কাছাকাছি থাকা আলভারেসের দিকে। বল পেয়েই সোজা ক্রোয়াটদের রক্ষণে ঢুকে পড়েন আলভারেস। কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কাছ থেকে আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন তরুণ স্ট্রাইকার। যদিও এতে কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল।
এরপর প্রথমার্ধের একদম শেষদিকে অল্পের জন্য গোলের দেখা পায়নি ক্রোয়েশিয়া। ফলে দুই গোল হজম করেই বিরতিতে যায় তারা। এগিয়ে থাকা আর্জেন্টিনা বিরতির পর হয়ে ওঠে আরও দুর্দান্ত। একের পর এক আক্রমণ করে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগের পরীক্ষা নিচ্ছিল দলটি। ৫৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত তারা। ক্রোয়াট ডিফেন্ডারদের ড্রিবল করে বল নিয়ে আলভারেসের সঙ্গে দেওয়া নেওয়ার এক পর্যায়ে দশ গজ দূরে থেকে শট নেন মেসি। সেটি ঝাঁপিয়ে ঠেকান লিভাকোভিচ। ৬৯তম মিনিটে আবারও গোল করেন আলভারেস। সতীর্থ থেকে বল পেয়ে ক্রোয়াট ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে নেন মেসি। বাইলাইন থেকে পাস দেন আলভারেসকে। দারুণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করতে ভুলেননি ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরোয়ার্ড।
শেষদিকে আর কোনো গোল না হলে ৩-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই ফাইনালে কোয়ালিফাই করে আর্জেন্টিনা। আগামী রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়া ফ্রান্স-মরক্কোর মধ্যে বিজয়ী দলের সঙ্গে ফাইনালে মুখোমুখি হবে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।