
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
আমার জীবনে ভাবিনি পায়ের তলায় মাটি হবে, আমাদের পাকা ঘর হবে। আমি ছিলাম মানুষের জমিতে। শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা আমাকে পাকা ঘর ও জমি দিয়ে আমার জীবনে আলো দিয়েছে। আমাকে আর মানুষের জমিতে ঘর করে থাকতে হবে না। সারাটা জীবন অন্যের জমিতে বাস করতে গিয়ে নানা কথা শুনতে হয়েছে। অনেক খারাপ কথা বলার পরেও সহে যেতে হয়েছে। বাবা ছিলেন ভারতের কোন এক জেলার বাসিন্দা। ১৯৪৭ সালে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ৮ ভাই বোনকে নিয়ে চলে আসেন বাংলাদেশে। আট সন্তানের জনক বাবা কোন স্থায়ী ঠিকানা গড়তে পারেনি।
বাবা ভারত থেকে পালিয়ে এসে এই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করতেন। যার বাসায় কাজ করত তার জমিতে আমাদের দয়া করে থাকতে দিত। আমিও সারাটা জীবন অন্যের জমিতে বাড়ি করে ছিলাম। অন্য ভাই বোনেরা যে যার মতো ঠিকানা খুঁজে নিয়েছে আমি অন্ধ হওয়ায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছি।
এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে আমাদের, তারা কোন খোঁজ খবর নেয় না। প্রায় পৌনে এক শতাব্দীর দূঃখ শেষ হয়েছে বর্তমান সরকারের হাত ধরে। আনন্দে চোখের অশ্রু মুছতে মুছতে এমনটাই বলছিলেন রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের আরজি গরকতগাঁও এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পের ৪৮টি ঘরের মধ্যে একটি ঘর পাওয়া আক্তার হোসেন অন্ধ দম্পতি।
অন্ধ আক্তার হোসেন বলেন, কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি পায়ের তলায় মাটি হবে। শুধু রাতে দু'চোখের পানিতে বালিশ ভিজেছে। সেই আশা পূরণ করেছেন শেখের বেটি। আল্লাহর পরে শেখের বেটি। এখন যতই অভাবে থাকিনা কেন ঝড় বাদলের দিনে মাথার উপরে আশ্রয় হলো। ঝড়ের দিনে চাল উড়ে যাওয়ার ভয় নাই। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নামাজে সব সময় দোয়া করি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান বলেন, ভুমিহীনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই বাছাই করে প্রকৃত ভুমিহীনদের এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। যার ফলে প্রকৃত উপকার ভোগীরা বের হয়ে এসেছে।