নিজস্ব প্রতিবদেক:
হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা রংপুরের পীরগাছা এলাকায় সংঘটিত হামলা এবং তার পরবর্তী মিডিয়া প্রচারণা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “রংপুরের পীরগাছায় প্রকাশ্য দিবালোকে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে,
স্থানীয় কিছু সাংবাদিক ঘটনাটিকে বিকৃতভাবে ও বিভ্রান্তিমূলকভাবে প্রচার করেছে। প্রথমে আমরা কিছু গণমাধ্যম দেখতে পেলাম, যারা মিথ্যাভাবে ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তওহীদ’ বলে প্রচার চালিয়েছে। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ অসত্য। হেযবুত তওহীদ কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। এছাড়া তারা প্রচার করেছে যে ‘হেযবুত তওহীদ আক্রমণ চালিয়েছে’ - অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত। সেখানে হেযবুত তওহীদ আক্রান্ত হয়েছে! আমাদের সদস্যরা একটি বাসার ভেতরে অনুষ্ঠান করছিলেন, সেখানে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। অথচ কিছু মিডিয়া উল্টোভাবে প্রচার চালিয়ে গেছে।”
মঙ্গলবার রংপুরে হেযবুত তওহীদের উপর পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আরও দুঃখজনক বিষয় হলো, কিছু সংবাদমাধ্যম একতরফাভাবে উগ্রবাদী হামলাকারীদের বক্তব্য প্রচার করেছে, কিন্তু আক্রান্তদের- অর্থাৎ আমাদের কোনো সদস্যের বক্তব্য নেয়নি, তাদের কোনো স্টেটমেন্ট প্রকাশ করেনি। এতে করে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে, যা চরম অন্যায়।”
সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়েছি, অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য নয়। তাই আমরা গণমাধ্যমকে আহ্বান জানাব- বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করুন। বাংলাদেশ এমনিতেই ধীরে ধীরে উগ্রবাদীদের হাতে জিম্মি হতে চলেছে, আপনারা তাদের হাতিয়ার হয়ে উঠবেন না। গণমাধ্যমের দায়িত্ব জনগণকে সত্য জানানো, বিভ্রান্ত করা নয়।”
এসএম সামসুল হুদা রংপুরের ঘটনায় চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতি ও বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, আমার মৌলিক অধিকার হলো- আমি আমার বাড়িতে থাকব, আমি ন্যায়সংগতভাবে সংগঠন করব। যদি কারও কোনো আপত্তি থাকে, তাহলে সেটি আইনগতভাবে বলতে পারে। কিন্তু মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শত শত লোক জড়ো করে, হুমকি দিয়ে আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া -এটি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পৃথিবীর ইতিহাসে কোথায় এমন বর্বরতা চলছে? ফিলিস্তিনে চলছে! সেখানে নির্দোষ মুসলমানদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, হামলা চালানো হচ্ছে। আমরা দেখেছি মিয়ানমারে, যেখানে নিরীহ মানুষদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর আজ, স্বাধীন বাংলাদেশেও আমরা রংপুরের পীরগাছায় একই ঘটনা দেখছি! হেযবুত তওহীদের নিরপরাধ সদস্যদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাহলে আর কী হলে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে?”
এসএম সামসুল হুদা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, “যদি আমাদের মতো শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের ওপর এমন মানবাধিকার লঙ্ঘন চলতে থাকে, তাহলে একদিন বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকবে না! আমাদের সেনাপ্রধানও বলেছেন যে, যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। উগ্রবাদীরা দেশকে সেই দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। সুতরাং, রংপুরে যারা আজ উদ্বাস্তু হয়েছে, যারা নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে, তাদের মানবাধিকার রক্ষা করুন। আর যারা এই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনুন -এটাই আমাদের দাবি!”