
রৌমারী উপজেলায় নদীভাঙন প্রতিরোধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন ভাঙন কবলিত স্কুল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রাম সংলগ্ন নদীর কিনারে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে প্রায় ৫ হাজার জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কেএম ফজলুল হক মন্ডল, সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভার:) প্রধান শিক্ষক মোমিনুল ইসলাম, চর শৌলমারী ইউনিয়ন শাখার বিএনপির সভাপতি এমএ ছাত্তার, নাজমা খাতুন, রাহেলা বেওয়া, মহিনুর বেগম, বিশিষ্ট সমাজসেবক মান্নান চিশতী, আব্দুল খালেক, ইউনুস আলী, হাফিজুর রহমান ও ফয়েজ উদ্দিন প্রমুখ।
নাজমা খাতুন বলেন, “আমার বাড়িভিটা নদীতে ভেঙে গেছে। আমি এখন খোলা আকাশের নিচে কষ্টে বসবাস করছি। অন্য কোন পরিবার যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। আমরা রিলিফ চাই না, নদী ভাঙন বন্ধ চাই।”
কেএম ফজলুল হক মন্ডল বলেন, “নদী ভাঙন একটা বড় সমস্যা। ভাঙনরোধে আমরা অনেকবার স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এই এলাকাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।”
এদিকে, চর শৌলমারী ইউনিয়ন শাখার বিএনপির সভাপতি এমএ ছাত্তার বলেন, “দ্রুত নদী ভাঙনরোধ না করলে প্রাথমিক স্কুল, হাই স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও বাজার নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। এক সময় রৌমারীর মানচিত্র হারিয়ে যাবে।”
গত কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ব্রহ্মপুত্র নদের সোনাপুর চর, গুচ্ছগ্রাম, চর গেন্দার আলগা, ঘুঘুমারী, সুখেরবাতি, দক্সিণ নামজের চর, খেওয়ারচর ও হবিগঞ্জ এবং খেদাইমারী এলাকায় ভাঙনের ঘটনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এতে গত কয়েকদিনে ৫০টি বসতবাড়ি ও কয়েকশ একর কৃষি জমি নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, এবং প্রায় ২০০টি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমানে কোন স্থান না পেয়ে নদীর কিনারের পাশে পাটের শোলা ও টিনশেড দিয়ে ছাপড়া ঘর তুলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা জনপ্রতিনিধিরা নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াননি।