
দেশজুড়ে ডেস্ক:
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্যায় ভেঙে যাওয়া পাকা রাস্তাটি মেরামত না করায় ১২ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় বারবার আলোচনা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শনিবার চরশৌলমারী ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ ও রাস্তাটি বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর এডিপির বরাদ্দ দিয়ে মাঠের গর্তটি ভরাট করা হলেও অন্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় রাস্তাটি এখনও মেরামত করা হয়নি।
ফলে চরশৌলমারী বাজার থেকে উত্তরের ফুলকার চর, চর কাজাইকাটা, শান্তির চর, মশালের চর, খেওয়ারচর, আনন্দ বাজার, ইটালুকান্দা, গেন্দার আলগা, চর ইটালুকান্দাসহ ১২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল চরশৌলমারী বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে নিতে অতিরিক্ত খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এ ছাড়া ঘোড়ার গাড়ি, অটোবাইক, অটোভ্যান, রিকশা ও ঠেলাগাড়িসহ প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেকে দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন। যানবাহন সচরাচর চলাচল না করায় সাধারণ মানুষকে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী হাটবাজারে গিয়ে কাঁধে করে বাজার খরচ নিয়ে বাসায় ফিরছেন। স্থানীয়রা দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন।
অপরদিকে, বন্যার পানির স্রোতের কারণে অধিকাংশ কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এলাকাবাসী আশরাফ আলী জানান, “বন্যার পানিতে রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় খুব কষ্ট হচ্ছে। এ যুগেও বহু মানুষ হেঁটে চলাচল করছে। ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ভাঙা রাস্তাটিসহ অন্যান্য ভাঙাগুলো দ্রুত মেরামত করা দরকার।”
ইউপি সদস্য শুকুর আলী বলেন, “বন্যার পানির স্রোতে এই পাকা রাস্তাটি ভেঙে যায়। সব ধরনের যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা হলে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।”
চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান একেএইচএম সাইদুর রহমান দুলাল জানান, “পশ্চিমের বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি প্রবেশ করে এবং তীব্র স্রোতে ইউনিয়ন পরিষদের মাঠের বড় অংশ ভেঙে যায়। ভবনের নিচের অংশের মাটি সরে গিয়ে ভবনটি একপাশে হেলে যায়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এডিপির বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত জিও ব্যাগ ও মাটি ফেলে ভবনটি রক্ষা করা হয়েছে। তবে রাস্তাটি মেরামতের জন্য এখনও কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছে।”
উপজেলা প্রকৌশলী মুঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ ও রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মাঠ ও রাস্তা মেরামতের জন্য আপাতত এডিপি থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভাঙাটি মেরামতের জন্য আরও বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু করা হবে।”