
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে চুরির আপবাদে হাত-পা বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে আরিফুল খান( ২০) নামের এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে স্থানীয় ৪/৫ যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা ওই যুবককে ২/৩ঘন্টা ধরে নির্যাতন করে। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখে।
স্থানীয় ইউপির সদস্য তাকে বৃহস্পতিবার (১৬মার্চ) সন্ধ্যা ছয়টারদিকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্বরোচিত এ নির্যাতনের ঘটনায়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে।
নির্যাতনের শিকার আরিফুল খান দমদমা গ্রামের উসমান খানের ছেলে। আরিফুলের স্বজনদের অভিযোগ ওই ওয়ার্ড যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. কাওছার,ফজলুল হক, মেহেদী হাসান, রাসেল, জিয়াউর রহমান,সিরাজ উদ্দিন, ইজ্জত আলী গং তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে। এঘটনায় থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভাইরাল হয়েছে। এর আগে চুরির অপবাদে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় দুই ঘন্টা তাকে থেমে থেমে হাত-পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়।
আরিফুলের বড় ভাই আশরাফুল জানান, আমার ভাই আরিফুল কিছু নেশা করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই ভাই বাড়িতে কাজ করেছি। আরিফ কাজ শেষে গোসল করে বাড়িতে শুয়ে ছিলো। পার্শবর্তী ডা.কাইয়ুমের প্রজেক্টের সামনে রাখা একটি গাড়িথেকে টাকা চুরির হয়। ওয়ার্ড যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য কায়সারের নেতৃত্বে আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাত-পায়ে দড়ি বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
নির্যাতনের শিকার আরিফুল ইসলাম বলেন, সকালে আমি বাড়িতে রুটি খেয়ে কাজ শেষে ঘরে শুয়ে ছিলাম। কায়সার আমাকে ফোন দিয়ে যেতে বলে। আমি তার ডাকে না গেলে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে। আমি চুরি করিনি। হাত জোড় করে প্রাণ ভিক্ষা চাইছি। তাতে তাদের মন গলেনি। তারা আমাকে বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার জাকির হোসেন শেখ জানান, আমি সন্ধ্যার দিকে জানতে পাই আরিফুলকে অভিযুক্তরা নির্যাতন কওে মুমুর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখেছে। তাকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি। চুরির ভিত্তিহীন অভিযোগে এভাবে মারধর উচিৎ হয়নি।
যুবলীগ নেতা কায়সার জানান, আরিফুল এলাকার চিহ্নিত চোর। এর আগে তার বিরুদ্ধে বহু চুরির অভিযোগ আছে। সে টাকা চুরি করেছে। তাই তাকে মেরেছি।
প্রহলাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক আকন্দ বলেন, শুনেছি কোন এক ব্যক্তির গাড়ি থেকে টাকা চুরি হয়েছে। তবে, ওই যুবক চুরির সাথে জড়িত কিনা শুনিনি। এভাবে আইন নিজের হাতে নেওয়া ঠিক হয়নি।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত আজিজুর রহমান বলেন, যুবককে নির্যাতনের বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে খোঁজ খবরনিয়ে প্রয়োজনীয় আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।