Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / শরীয়তপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজে ধীরগতি - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

শরীয়তপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজে ধীরগতি

August 02, 2022 06:02:13 AM  
শরীয়তপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজে ধীরগতি

শরিয়তপুর সংবাদদাতা:
সুস্বাস্থ্যই সম্পদ। সুস্থ দেহ জীবন-জীবিকার সাথে অঙ্গা অঙ্গী ভাবে জড়িত। মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে অসুস্থ হয়। অসুস্থ ব্যক্তি কে সুস্থ করতে প্রয়োজন হয় ভালো চিকিৎসা। ভালো চিকিৎসা সেবার জন্য প্রয়োজন হয় ডাক্তার, হাসপাতাল এবং ভালো পরিবেশ। শরীয়তপুরে চিকিৎসা সেবায় ভালো পরিবেশ এখনও গড়ে ওঠেনি। শরীয়তপুর সদরে একশত বেডের হাসপাতাল থাকলেও এখানে চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে রোগীরা সন্তুষ্ট নয়। হাসপাতালে ডায়াগনস্টিক বিভাগ থাকলেও রোগীরা তেমন সেবা পাচ্ছে না। এছাড়া হাসপাতালের ডাক্তারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারী তাদের নামে বেনামে ক্লিনিক রয়েছে। তাদের ক্লিনিক ব্যবসার সিন্ডিকেটের  কারণে হাসপাতালে ডায়াগনস্টিক বিভাগের কার্যক্রম জিম্মি। রোগীরা এই জিম্মি থেকে মুক্তি চায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর হাসপাতাল এবং শরীয়তপুর শহরের ক্লিনিক গুলোতে নেই কোন এন্ডোসকপি, সিটি স্কিন মেশিন এবং ইউরোলজিস্ট এক্সরে মিশিন। হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের কাছে শরীয়তপুরের রোগীরা  জিম্মি। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে এদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

শরীয়তপুরবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষা ছিল শরীয়তপুরে ভালো একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মিত হবে। জেলার বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কারণে শরীয়তপুর শহরে আড়াইশো বেডের হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে।এই হাসপাতালের নির্মাণ কাজ ধীর গতির কারণে রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজ ধীরগতি হলেও শরীয়তপুরবাসী চিকিৎসা সেবায় সুফল পেতে যাচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে আড়াইশো বেডের হাসপাতাল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়। আড়াইশো বেডের হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৫কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা। এই হাসপাতাল নির্মাণের জন্য টেন্ডার পায় ফোরকান আহমেদ খান কোম্পানি লিমিটেড এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও কাজ শুরু করে ২০২০ সালে। হাসপাতাল নির্মাণের জন্য যে জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে ওই জায়গার মাটি কাদাযুক্ত নরম থাকার কারণে পাইলিং এর কাজ শেষ করতে প্রায় এক বছর সময় লাগে। মাটি নরম থাকার কারণে তিনবারে পাইলিং এর কাজ শেষ করে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের  তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আব্দুস সোবাহান বলেন, আড়াইশো বেডের হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু করে দেরিতে। তারপর মাটি নরম থাকার কারণে তিনবারে পাইলিং এর কাজ শেষ করে। নির্মাণ কাজ ধীরগতি হলেও কাজের মান ভালো। আমি এটুক বলতে পারি শতভাগ কাজ বুঝে রাখবো। জেলা গণ পূর্ত বিভাগের  নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মহিবুর রহমান অত্যন্ত ভালো মানুষ। সে এখানে থাকাকালীন অবস্থায় কাজে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই।

ফোরকান আহমেদ কোম্পানি লিমিটেড এর ঠিকাদারি  প্রতিষ্ঠানের মালিক  জাহাঙ্গীর  হোসেন  বাবু  বলেন, শরীয়তপুর হাসপাতালের কাজ করতে এসে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। গভীর পুকুর ও নরম মাটি থাকার কারণে এক পাইলিং এর কাজ তিনবারে শেষ করতে হয়েছে। প্রথম ডিজাইনে ভবন নির্মাণের কাজ করতে পারিনি দ্বিতীয় ডিজাইন করে কাজ করতে হয়েছে। টেন্ডার অনুযায়ী বর্তমান মালের দাম ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে তবুও শতভাগ ভালো কাজ করার চেষ্টা করছি।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মহিবুর রহমান পি ইজ জানান তার অধীন চলমান সকল প্রকল্পের মধ্যে নির্মাণাধীন সদর হাসপাতালটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। করোনা কালীন সময়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ লকডাউন চলাকালীন তিনি তার মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে করোনা সন্দেহে কর্তব্যরত ডাক্তার চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তার মাকে হারান। তাই হাসপাতাল ওনার কাছে সবচেয়ে দুর্বলতার জায়গা। তাই এই প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে যথাসময়ে সমাপ্তের জন্য তিনি এবং তার অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।