Date: May 06, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / শরীয়তপুর কুন্ডেরচর অতিদরিদ্রদের অভাব নেই; তবুও ইজিপিপি'র কাজে ভেকু মেশিন! - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্র...

শরীয়তপুর কুন্ডেরচর অতিদরিদ্রদের অভাব নেই; তবুও ইজিপিপি'র কাজে ভেকু মেশিন!

May 29, 2024 11:22:44 AM   জেলা প্রতিনিধি
শরীয়তপুর কুন্ডেরচর অতিদরিদ্রদের অভাব নেই; তবুও ইজিপিপি'র কাজে ভেকু মেশিন!

জাবেদ শেখ, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের অভাব নেই। তবুও অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) কাজ বাস্তবায়ন করছে ভেকু মেশিন দিয়ে। প্রকল্পের কাজের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো শেষ হয়নি রাস্তার কাজ। 
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুন্ডেরচর ইউনিয়ন ২০২১ সালে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে ৯টি গ্রামের মধ্যে ৭ টি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এই ৭ গ্রামের মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরে। এসব ভিটামাটি হারা মানুষ, জীবন-জীবিকার সন্ধানে ঢাকা সহ নানা জায়গায় চলে গেছে। এখনো রয়ে গেছে শত-শত পরিবার। তারা সবাই ভূমিহীন হয়ে কর্মহীন জীবন যাপন করছে। জাজিরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন তালিকায় দেখা যায়, সরকার ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে "অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি)" ২য় পর্যায়ে কাজ চলছে কুন্ডেরচর ইউনিয়নে।  ১টি রাস্তা বাস্তবায়নের জন্য দুই ভাগে মোট ৬৩ জন শ্রমিক ধরা রয়েছে। এর ভেতর ১৯ জন নারী ও ৪৪ জন পুরুষ শ্রমিক। 
০৭নং ওয়ার্ড পাঁচুখার কান্দি কাইয়ুম খার বাজার হইতে জালাল ঢালীর জমির শিমুল গাছ অভিমূখী মাটির রাস্তা নির্মাণ। শ্রমিক ধরা ১০ জন নারী ও ২২ জন পুরুষ। 
একই রাস্তা, ০৮নং ওয়ার্ড কাঁকড়াভোগ মৌজায় আলতু সিকদারের বাড়ি হতে জালাল ঢালীর জমির শিমুল গাছ অভিমূখী মাটির রাস্তা নির্মাণ। এর জন্য ৯ জন নারী ও ২২ জন পুরুষ শ্রমিক ধরা রয়েছে। এই ৬৩ জন শ্রমিক প্রকল্পের তালিকায় থাকলেও বাস্তবে তা নেই। 
৭নং ওয়ার্ড পাঁচুখার কান্দি নদীরপাড় চায়ের দোকানে বসে ছিলেন এলাকার নানা বয়সের লোকজন। তাদের কাছে জিঙ্গাসা করা হয়। রাস্তার কাজের তালিকায় রয়েছে ৬৩ জন স্থানীয় অতিদরিদ্র নারীও পুরুষ শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো কথা,কেন ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করছে? এমন প্রশ্নে তারা বলেন, মানুষ দিয়ে মাটি কাটিয়ে তাদের আয়-উন্নতি হয় না। তাই ভেকু লাগায়ছে। একদিন মানুষ দিয়ে কাজ করাইয়া, ছবি তুইলা ছাইড়া দিছে। আয়-উন্নতির আশায় এখন মানুষ দিয়ে কাজ করায় না। এই কাজের দায়িত্বে আছে ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার নওশাদ ফকির। 
কুন্ডেরচর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার নওশাদ ফকির বলেন,কাজের সভাপতি চেয়ারম্যান সাহেব। আমি কাজের দায়িত্বে আছি। উপজেলা নির্বাচন ও ঘূর্ণি ঝড়ের কারণে কাজ করতে পারি নাই। কয়দিনের ভেতর কাজ শেষ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এসময় মেম্বার নওশাদকে কন্ডুেরচর ইউনিয়নে ভিটামাটি নাই এমন কতগুলো পরিবার আছে। তিনি এমন প্রশ্নের জবাবে এক কথায় বলেন, অনেক-আছে। আরও অনেক মানুষ নদী গর্ভে ভিটামাটি হারিয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকা চলে গেছে। এখনো তাতে ৩শ'র উপরে অতিদরিদ্র আছে। যাদের কোন বাড়ি-ঘর নাই।  অতিদরিদ্র থাকতে কেন ভেকু মেশিন দিয়ে রাস্তার কাজ করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মেম্বার নওশাদ বলেন, আপনি চেয়ারম্যান ও সচিবের সাথে একটু যোগাযোগ করেন। কাজের বীল পেলে খুশি করা হবে। 
কুন্ডেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার বেপারি  বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কাজ সম্পূর্ণ করা হয় নাই। আমি ঢাকা আছি। এসে আপনার সাথে দেখা করবো। এছাড়া কাজের বীল পেলে খুশি করা হবে। 
জাজিরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ সোহাগ বলেন, প্রতিটি শ্রমিকের জন্য দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা। এই টাকা মন্ত্রনালয় থেকে শ্রমিকদের মোবাইল একাউন্টে পাঠানো হয়। এবিষয়ে উর্ধতনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। 
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলামকে কাজে অনিয়মের কথা মোবাইল ফোনে জানালে তিনি বলেন, আপনি কালকে অফিসে আসেন। আমি চেয়ারম্যানকে বলে দিবানে। এই কথা বলে তিনি মোবাইল কল কেটে দেন। 
এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন,এই খবর কেউ আমার কাছে এখনো জানায়নি। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।