
শরীয়তপুর ভাষা সৈনিক নারায়ণ চন্দ্র দে’র সম্পত্তির উপর রাস্তা নির্মাণ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। ভাষা সৈনিক নারায়ণ চন্দ্র দে জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল বাবুর শ্বশুর। গতকাল শনিবার সকালে অনল বাবুর শ্বশুরবাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।
ঘটনায় সরেজমিনে দেখা যায়, মৃত ভাষা সৈনিক নারায়ণ চন্দ্র দে'র জায়গার উপর পুরনো ভাঙা বাঁশ এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। জায়গাটিতে রয়েছে শ্মশান। শ্মশানের কোল ঘেঁষেই রয়েছে একটি রাস্তা। রাস্তাটি সরু ছিল। স্থানীয়রা জানান, বাঁশের বেড়া ভেঙে ইট বিছিয়ে রাস্তা প্রশস্ত করা নিয়ে এই ঝামেলা বাঁধে। এখানে তেমন কোনো মারামারি বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।
বাড়ির প্রয়াত নারায়ণ চন্দ্র দে'র ছেলে রতন কুমার দে (৪০) জানান, আমি ভোর বেলা শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি বেড়া ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বেড়া ভাঙছ কেন? জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে, রাস্তা হবে। আমি বলি, এখানে আমার ভাতিজার কবর ও শ্মশান খোলা রয়েছে। আমরা হাঁটার জন্য সাড়ে তিন ফুট জায়গা দিয়েছি। রাস্তার জন্য জায়গা চাইলে পাশের থেকে নিতে হবে। হিন্দু বলে আমাদের সঙ্গে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করি।
প্রয়াত নারায়ণ দে'র নাতি শুভ্রা (১৮) বলেন, আমার দাদু মানবতার খাতিরে হাঁটার রাস্তা দিয়েছিলেন। এখন সেই রাস্তা রিকশার জন্য প্রশস্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা হিন্দু বলেই এমনটা করছে। পাশের দেয়াল ভেঙে নিতে পারেনি, কারণ তারা মুসলমান। শ্মশানের উপর ময়লা ফেলবে, পায়ের ধুলো পড়বে—এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর প্রসাদ চৌধুরী বলেন, রাস্তা যদি সরকার নিতে চায়, তবে আইন মেনে নিতে হবে। পৌরসভার নিয়ম অমান্য করে কেন এটা করা হলো? আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত দোষীদের শাস্তি চাই। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে আমরা ভীতির মধ্যে আছি। সরকারের কাছে আমাদের আট দফা দাবি রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেশী রব্বানী বলেন, এই রাস্তা পৌরসভার টেন্ডার করা রাস্তা। জনসাধারণের প্রয়োজনেই এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি এখন ঢাকায় আছি। সকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সরেজমিনে এসে অভিযোগ তদন্ত করেছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তের দাবি জানাই।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে রতন দে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।