
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, “দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি ছোট পরিসরে সংস্কার চায়, না কি দীর্ঘ মেয়াদে। জনগণের মতামত অনুযায়ীই নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।”
বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস এই মন্তব্য করেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারে, সেই প্রক্রিয়া তৈরি করা হবে।”
গত বছর জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি জানায় এবং ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতির মাধ্যমে তাদের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে।”
“গত ১৬ বছরে নতুন ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ না পাওয়াটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক,” বলেন ইউনূস।
সরকারের সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, “জনগণের মতামত না জেনে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। যদি দ্রুত সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়, তাহলে এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করা হবে। আর যদি দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার প্রয়োজন হয়, তাহলে আরও ছয় মাস সময় লাগবে।”
বর্তমান প্রজন্মকে “মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম” হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইউনূস বলেন, “তারা শুধু বাংলাদেশি নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “এই প্রজন্ম পুরনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হবে, যার ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।”
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ইতিমধ্যেই গতি ফিরে এসেছে।”