Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / হাওরে উন্নয়ন প্রকল্পে সফল এলজিইডি, চলছে কর্মযজ্ঞ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

হাওরে উন্নয়ন প্রকল্পে সফল এলজিইডি, চলছে কর্মযজ্ঞ

March 25, 2025 07:31:05 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
হাওরে উন্নয়ন প্রকল্পে সফল এলজিইডি, চলছে কর্মযজ্ঞ

আজিজুল হক, কিশোরগঞ্জ:
কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে মানুষের যাতায়াত ও জীবনমান উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। কয়েক’শ কোটি টাকার বড় প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, আর কিছু প্রকল্পে এখনো চলছে কর্মযজ্ঞ।
একসময় হাওর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অনুন্নত ও এলোমেলো। দুর্বল অবকাঠামোর কারণে কৃষিপণ্য পরিবহনসহ দৈনন্দিন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হতো হাওরবাসীকে। পর্যটনেরও ছিল সীমাবদ্ধতা, যার প্রভাব পড়েছিল স্থানীয় অর্থনীতিতে। এই অবস্থার পরিবর্তনে এলজিইডি হাতে নিয়েছে একাধিক মেগা প্রকল্প।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, মিঠামইন কামালপুর ফেরিঘাটে ঘোড়াউত্রা নদীর ওপর ১৪৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০২ মিটার দীর্ঘ ফেরি ব্রিজের কাজ ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর শুরু হয়, যা ২০২৫ সালের ১৬ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। একইভাবে, মিঠামইন কাজীপাড়া মহিষার কান্দি রোডে ঘোড়াউত্রা নদীর ওপর ৩৬২ মিটার দীর্ঘ ৪৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতুর কাজ ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া, মিঠামইনে ২৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রেস্ট হাউজ নির্মাণের কাজ চলছে, যা ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। মিঠামইন বাজারে চারতলা ফাউন্ডেশনের ওপর দুইতলা বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণ প্রকল্পের কাজও চলমান, যা ২০২৫ সালের এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে।
অন্যদিকে, ইটনা উপজেলার বর্শিকুড়া এলাকায় ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৯০.৫৪ মিটার দীর্ঘ একটি সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমবে এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ইতোমধ্যে এসব উন্নয়নের সুফল পেতে শুরু করেছেন। মিঠামইন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মো. নূর হোসেন ও আবু হোসেন জানান, আগে নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হতো, এখন সেতু হওয়ায় সহজে যাতায়াত করা যাচ্ছে। কৃষিজাত পণ্য পরিবহন ও গবাদিপশু নেওয়া-আনা সহজ হয়েছে।
ইটনা উপজেলার বড়শিকুড়া গ্রামের আব্দুল গনি বলেন, “এই ব্রিজটি আমাদের গ্রামে গর্ভবতী নারীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। আগে জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসা নিতে যাওয়া ছিল কষ্টকর, এখন যাতায়াতে আর কোনো ঝামেলা নেই। বর্ষাকালে পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়বে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।”
ইটনা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বলেন, “বর্শিকুড়া গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল। এই সেতুটি চালু হলে তাদের কষ্ট লাঘব হবে।”
কিশোরগঞ্জ এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা হাওরবাসীর স্বপ্নপূরণে কাজ করছি। বেশ কয়েকটি প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে, যা আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আশাবাদী, সময়মতো প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে হাওর অঞ্চলের জীবনযাত্রায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।