Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সংগঠন সংবাদ / হত্যার উস্কানিদাতা ফতোয়াবাজরা কি আইনের ঊর্ধ্বে - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

হত্যার উস্কানিদাতা ফতোয়াবাজরা কি আইনের ঊর্ধ্বে

October 23, 2022 05:06:38 AM   নিজস্ব প্রতিবেদক
হত্যার উস্কানিদাতা ফতোয়াবাজরা কি আইনের ঊর্ধ্বে

হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে যত হামলা হয়েছে তার অধিকাংশই হয়েছে ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন গোষ্ঠীর উস্কানিতে। তাদের অন্ধ অনুসারীরা উক্ত গোষ্ঠীর উস্কানিতে হামলা চালায় এবং নির্দোষ নিরপরাধ আইন মান্যকারী হেযবুত তওহীদ সদস্যদের হতাহত করে। হত্যার উস্কানিদাতা এসব ফতোয়াবাজরা আইনের ঊর্ধ্বে কিনা- এমন প্রশ্ন রেখে হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বিরূদ্ধে গুজব ছড়িয়ে নির্বিচারে আক্রমণ, মাদারিপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী ও পাবনাতে ৫ জনকে হত্যা, বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া, মসজিদ ভেংগে দেয়া, দোকানপাট লুট করাসহ মৌলিক মানবাধিকার লংঘনের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনটির সহস্রাধিক সদস্য যোগদান করেন। তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শ্লোগান দেন, ফেস্টুন বহন করেন ও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি সম্পন্ন করেন। হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আন্দোলনের শীর্ষনেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম মহাসচিব এস এম সামসুল হুদা এবং পাবনায় নৃশংস আক্রমণে আহত আমিনুল ইসলাম সেদিনের চাপাতি-রামদা দিয়ে জঙ্গি হামলার বর্ণনা দেন।

হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, হেযবুত তওহীদ একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন। আন্দোলনটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশ ও মানুষের কল্যাণে যাবতীয় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মাদক, নারী নির্যাতন, ধর্মব্যবসা, ধর্মের অপব্যবহার, হুজুগ-গুজব, ধর্মীয় উন্মাদনা ও দাঙ্গার বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। দেশজুড়ে আন্দোলনের সদস্যরা এ কাজটি কোনোরূপ জাগতিক স্বার্থ ব্যতিরেকে সম্পূণরূপে ঈমানী চেতনা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে করে যাচ্ছেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এ পর্যন্ত হেযবুত তওহীদ চারশতাধিকবার হামলার শিকার হয়েছে। হামলাকারীরা বহু বাড়িঘর লুটপাট করার পর ভস্মীভূত করেছে, শত শত কর্মীকে রক্তাক্ত জখম ও বিকলাঙ্গ করেছে। এমন কি পাঁচ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে। বর্তমানে ধর্মব্যবসায়ীরা হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর বিভিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে আক্রমনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে ফেসবুকে নানা রকম মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। হেযবুত তওহীদের এমামের নামে ফেইক আইডি খুলে ভয়াবহ রকমের অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। ফেসবুক লাইভে এসে হেযবুত তওহীদের এমামের মাথার মূল্য ঘোষণা করেছে।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সংবিধানে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে আইন মান্য করা সাপেক্ষে সংগঠন করা ও মত প্রকাশের অধিকারের পাশাপাশি সম্পত্তি রক্ষার অধিকার, আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তাই আইনমান্যকারী নাগরিক হিসাবে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমাল, বাড়িঘর, কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির নিরাপত্তা বিধান করার জন্য এবং কোনো গোষ্ঠী যেন হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে আর অপপ্রচার, গুজব রটনা, হামলার উস্কানি ও ফতোয়া প্রদান করে আমাদের সাংবিধানিক মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ করার সাহস না পায় সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

pchtemam2
 

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ সংবাদিক জোটের সাধারণ সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা বলেন, একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে বলতে পারি, হেযবুত তওহীদ গত ২৮ বছরে একটিও অপরাধ করেনি। তারপরও হেযবুত তওহীদের নামে ক্রমাগত অপপ্রচার-গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তাদের ৫ জন সদস্যকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে -এর থেকে বড় মানবাধিবকারের লঙ্ঘনের প্রমাণ আর দরকার নেই। এখন সময় এসেছে সমস্ত গণমাধ্যমকর্মীদের, বুদ্ধিজীবীদের, মানবাধিকার কর্মীদের, আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে। তাদেরকে সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, সুজনের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। তিনি এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘যারা যারা এ হামলা চালিয়েছে এবং যারা পেছন থেকে ইন্ধন যুগিয়েছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় ও ধর্মীয় সামাজিক পরিচয় যাই হোক না কেন, তারা সন্ত্রাসী। কাজেই তাদেরকে বিচারের মুখোমুখী করতে হবে।’

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন, মো. মোতালিব খান, শামসুজ্জামান মিলন, আলামিন সবুজ, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন রব্বানী, পাবনা জেলা সভাপতি সেলিম শেখ প্রমুখ। তারা ন্যক্কারজনক এসব হামলার নিন্দা জানান ও হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত, হামলার উস্কানিদাতা, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানান। একইসাথে সরকারের প্রতি হেযবুত তওহীদের এমাম ও সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।