
মেহেদী হাসান সুমন:
রংপুরে নিউ আইডিয়াল হাসপাতালে স্কীন টিউমার অপারেশন করতে এসে ভুল চিকিৎসায় প্রাণ হারিয়েছে মানিক নামে এক রোগী। এ ঘটনায় মৃত মানিকের স্বজনরা তার মরাদেহ হাসপাতালের গেটে রেখে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আস্থাভাজন লোকজনের তোপের মুখে পড়ে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি রফাদফা করতে বাধ্য হয় মৃত মানিকের ভুক্তভোগী পরিবার। মৃত মানিক রবি দাস গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের রাম নগর এলাকার লক্ষিন দাসের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মৃত মানিক দাস গত ১৮ই আগষ্ট রাতে স্কীন টিউমার অপারেশনের জন্য ভর্তি হয় ধাপ চেকপোস্ট সংলগ্ন নিউ আইডিয়াল নামের এক বেসরকারি হাসপাতালে। ভর্তির দুই দিন পর সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাক্ষ ডা. শাহিদুল ইসলাম শাহিন ও অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের ডাঃ গোলাম মওলার মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২১শে আগষ্ট সোমবার সন্ধ্যায় অপারেশন করার জন্য ওটিতে নেয় মানিক দাস'কে।অপারেশন করার সময় অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন পুশ ডাক্তার যথা জায়গায় না দেয়ায় মানিকের শ্বাস ও খাদ্য নালী বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর খবর স্বজনরা জানার পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্বজনরা দীর্ঘ ৫ ঘন্টা ধরে মৃত মানিকের মরাদেহ লাশবাহী গাড়িতে রেখে হাসপাতালের গেঁটে বিক্ষোভ অবস্থান নিলে আইডিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষনিক হাসপাতাল থেকে সটকে পড়লেও,পরবর্তীতে তার আস্থাভাজন লোকজনকে লেলিয়ে দিয়ে ভুক্তভোগীদের তোপের মুখে ফেলে বিষয়টি এক লক্ষ আশি (১৮০০০০) টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে। এতে এ ঘটনায় ওই এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
মৃত মানিকের মেয়ে রানী দাস বলেন, আমার বাবাকে তারা ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলেছে, এবং আমাদের তোপের মুখে ফেলে মিমাংসা করতে বাধ্য করেছে।
তবে আইডিয়াল হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক ডাক্তার শাহিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, মৃত মানিকের অপারেশনের জন্য মৃত্যু ঘটেনি,তার মৃত্যু ঘটেছে আ্যনেস্থেসিয়া ইনজেকশনে এর দায়ভার আমার নয়
আ্যনেস্থেসিয়া ডাক্তারের।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা গণমাধ্যমকর্মী দৈনিক প্রথম খবরের বার্তা সম্পাদক তৌহিদ বাবলা, দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক মিজানুর রহমান মিজান,দৈনিক দাবানল এর স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল্লাহ খাঁন, চাঁদনী বাজার পত্রিকার জালাল উদ্দিন বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এই ধরনের জঘন্যতম অপরাধ আজকে নতুন নয়। এই যত্রতত্র ক্লিনিকগুলোর মালিক সেবা দেয়ার নামে কসাইখানা খুলে বসেছে । এদের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে এই ক্লিনিকগুলো চলছে তা নিয়ে প্রশাসন বিভাগের কোনো মাথাব্যথা নেই।
ঘটনাস্থলে থাকা ধাপ ফাড়ির এসআই মজনু মিয়া বলেন, রোগিকে অপারেশনের পূর্বে রোগীর স্বজনদের নিকট চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করে অপারেশন করায়, এ ঘটনায় রোগীর লোকের কোন অভিযোগ না থাকায় মানিকের মরাদেহ তাদের স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিউ আইডিয়াল হাসপাতালের পরিচালক মিনার বসুনিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।