
নালিতাবাড়ী সংবাদদাতা, শেরপুর:
সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে স্পেশাল ভিজিএফ এর চাল আনতে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে জনপ্রতিনিধি কর্তৃক আটকের পর ইউনুছ আলী (৪০) নামে এক অটোচালক বাড়ি ফিরে না আসায় উদ্বেগ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে তারই ছোট ভাই কৃষক লীগ নেতা আবু সাইদ দেওয়ান।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাত দশটার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ১নং পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারমারী বাজারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সোমবার (১৭ এপ্রিল) পোড়াগাঁও ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল ভিজিএফ এর আওতায় ২ হাজার ৫৯১ জনের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপরোক্ত চালের স্লিপ নিয়ে শেকেরকুড়া গ্রামের অটোচালক ইউনুছ আলী তার নিজের নামে থাকা একটি ও পাশের দুই দুস্থ নারীর নামে থাকা আরও দুটি স্লিপ নিয়ে বেলা ১১টার দিকে পরিষদে যান। পরে ইউনুছ আলী চাল উত্তোলন করতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন স্লিপ তিনটি জালিয়াতি করে বানানো বলে দাবী করে ইউনুছ আলীকে আটকে নির্যাতন করেন। বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে ইউনুছ আলীর পরিবারের পক্ষে তার ছোট ভাই ও ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আবু সাইদ দেওয়ান চেয়ারম্যান এর কাছে ফোন করে তার ভাইকে পাঠিয়ে দিতে বলেন। এসময় চেয়ারম্যান ইউনুছ আলীকে ফেরত পাঠাবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু বিকেল গড়ালেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন ইউনুছ আলীকে খোঁজে ব্যর্থ হন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে চেয়ারম্যান তার লোকজন এবং গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে পোড়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর আলীর বাড়িতে ইউনুছ আলীকে খোঁজতে যান।
ওমর আলী জানান, চেয়ারম্যানের লোকজন পরপর তিনবার তার বাড়িতে গিয়ে ইউনুছ আলীর সন্ধান করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করলে গ্রাম পুলিশ চলে যায়।একপর্যায়ে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও ইউনুছ আলী বাড়ি না ফেরায় তার স্বজনেরা উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং রাত দশটার দিকে তার সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে।
ইউনুছ আলীর ছোট ভাই আবু সাইদ আরও জানান, দলীয় নেতাদের মাধ্যমে প্রায় ৪শ স্লিপ বিতরণ করা হয়। আমার পরিবার আওয়ামী লীগ করে এবং ওই ভাইটি আর্থিকভাবে দূর্বল বিধায় দলীয়ভাবে তাকেও একটি স্লিপ দেওয়া হয়। কিন্ত পাশের আরও দুই অসহায় মহিলা অসুস্থ হওয়ায় তাদের স্লিপও নিয়ে যায়। স্লিপ কোনভাবেই জাল ছিল না। চেয়ারম্যান মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমার ভাইকে নির্যাতন করেছে, অপমান করেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন জানান, স্লিপগুলো জাল ছিল। তাই স্লিপগুলোকে তাকে দিয়েছে তার কাছে জানতে চেয়ে তা রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।