Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / হরিরামপুরে চাঞ্চল্যকর বিল্লাল হত্যা মামলা: এক আসামীর ফাঁসি, একজনের যাবজ্জীবন - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের...

হরিরামপুরে চাঞ্চল্যকর বিল্লাল হত্যা মামলা: এক আসামীর ফাঁসি, একজনের যাবজ্জীবন

May 01, 2025 04:50:36 PM   অনলাইন ডেস্ক
হরিরামপুরে চাঞ্চল্যকর বিল্লাল হত্যা মামলা: এক আসামীর ফাঁসি, একজনের যাবজ্জীবন

আফরিন আক্তার সিলভী:
হরিরামপুরের চাঞ্চল্যকর বিল্লাল হত্যা মামলায় এক আসামীকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন- পারভেজ হোসেন ওরফে সুমন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামী হলেন আব্দুল আলীম। গতকাল বুধবার মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে আসামীদ্বয়, বাদী, বিজ্ঞ আইনজীবী, পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায়ে আসামী সুমনকে ৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়াও তাকে ২০১ ধারার বিধানমতে আরো তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

অপর আসামী আলীমকে ৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়াও তাকে ২০১ ধারার বিধানমতে আরো তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

জানা যায়, নিহত বিল্লালের মেয়ে শাবনুর আক্তার স্মৃতিকে (১৪) পারভেজ হোসেন সুমন বিয়ের প্রস্তাব দিলে নিহত বিল্লাল তার কাছে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় স্মৃৃতিকে উত্তাক্ত করতে থাকে আসামী সুমন। উত্তাক্তের বিষয়টি সুমনের পিতা এখলাস মাদবরের কাছে জানায় বিল্লাল। এর জের ধরে বিল্লালকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সুমন।  

মামলার বিবরণে প্রকাশ, ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর রাত অনুমান সাড়ে ৯ টা থেকে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নিহত বিল্লাল হরিরামপুর উপজেলার মাচাইন এলাকার মাচাইন বাজার থেকে সাইকেল যোগে তার বাড়িতে ফেরার পথে জনৈক কাজী বাবুলের বাড়ির সামনে পৌঁছালে পাকা রাস্তার ওপর তাকে থামিয়ে আসামী পারভেজ হোসেন সুমন, আলীমসহ অন্যান্য আসামীগণ তাকে অতর্কিতভাবে পেছন থেকে ধারালো চাপাতি দ্বারা ভিকটিম বিল্লালের মাথার অগ্রভাগ, কপাল ও নাকে এলোপাথারীভাবে কোপানোসহ বিল্লালের পুরুষাঙ্গে থাকা অন্ডকোষে আঘাত করতঃ বিল্লালকে হত্যা করে। হত্যা করার পর ভিকটিম বিল্লালের লাশটি পাকা রাস্তা সংলগ্ন ইছামতি নদীর খালের পানিতে ফেলে দেয়ার অভিযোগে আসামীদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় বিল্লালের স্ত্রী আফরোজা বেগম হরিরামপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তা আশিস কুমার স্যার্নাল ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আইনি প্রক্রিয়ায় চার্জ গঠন শেষে বিজ্ঞ আদালতে ২২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তি-তর্ক শেষে গত ৩০ এপ্রিল রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

এদিন সকাল ১১টার দিকে বিজ্ঞ আইনজীবি, মামলার বাদি, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের ভীড়ে তীল ধারণের ঠাই ছিল না বিজ্ঞ আদালতে। আদালত প্রাঙ্গনে আসামীদের উপস্থিতিতে স্বাক্ষ্য গ্রহণ, এজাহার, জব্দ তালিকা, সুরতহাল প্রতিবেদন, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন, ১৬৪ ধারায় আসামীদের স্বীকারোক্তিতে বিজ্ঞ আদালতের নিকট সন্দেহাতীতভাবে আসামীদ্বয় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে উপরোক্ত দণ্ডাদেশ প্রদান করেন মানিকগঞ্জের আইনাঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র, বিচক্ষণ, দূরদর্শী ও প্রতিভাবান ন্যায় বিচারক বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিন। এ রায়ে বাদি, বিজ্ঞ আইনজীবী, সাংবাদিকসহ উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেন।

মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক এবং রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট বুলবুল আহমেদ গোলাপ ও এডভোকেট তোফাজ্জেল হোসেন।