Date: May 02, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / আশুলিয়ায় গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

আশুলিয়ায় গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

August 22, 2022 10:26:30 PM  
আশুলিয়ায় গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

দাউদুল ইসলাম নয়ন,  ঢাকা উত্তর প্রতিনিধি:
আশুলিয়া থানার ঘোষভাগে ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বর্বরচিত গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। গত রবিবার বিকেল ৪টায় গ্রামীণ কনভেন্সের সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাভার উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন খান, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহবায়ক কোবির হোসেন সরকার, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের অন্যতম আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাদের দেওয়ান, আশুলিয়া থানার যুবলীগ নেতা আরিফ মাদবর।

এসময় ডা. ঢাকা-১৯ সংসদ সদস্য এনামুর রহমান এমপি বলেন, ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে অতর্কিতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। মারা যান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী। সাংবাদিকেরাও আহত হন।

আওয়ামী লীগ বলছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের কালরাতের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে সংগঠনের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের প্রথম সারির নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যেই ওই ঘৃণ্য হামলা চালায় ঘাতক চক্র। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। সেদিন ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।

সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরপরই তাঁকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে একের পর এক গ্রেনেড। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিণত হয় এক মৃত্যুপুরীতে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। স্প্লিন্টারের আঘাতে মানুষের হাত-পাসহ বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। সভামঞ্চ ট্রাকের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় রক্তাক্ত নিথর দেহ। লাশ আর রক্তে ভেসে যায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সামনের পিচঢালা পথ।

নিহত ও আহত ব্যক্তিদের জুতা-স্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ভেসে আসে শত-শত মানুষের গগনবিদারী আর্তচিৎকার। বেঁচে থাকার প্রাণপণ চেষ্টারত মুমূর্ষুদের কাতর-আর্তনাদসহ অবর্ণনীয় মর্মান্তিক সেই দৃশ্য।

ওই দিন শুধু গ্রেনেড হামলাই নয়, সেদিন শেখ হাসিনার গাড়ি লক্ষ্য করেও চালানো হয় ছয়টি গুলি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তিনি আহত হন, তাঁর শ্রবণশক্তি চিরদিনের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলার পরপরই শেখ হাসিনাকে কর্ডন করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তার তৎকালীন বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে। ২১ আগস্টের রক্তাক্ত হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ জনে। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বাবুল মাস্টার, ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মোশারফ হোসেন মুসা,ইয়ারপুর ইউনিয় আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বশির আহমেদ ভূঁইয়াসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক, কৃষক লীগ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।