
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বড় ডাংরি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছেন ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো গ্রাম। পরে সেনা ও পুলিশের যৌথ অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করা হয় ১০ জনকে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় মো. গোলাপ খাঁ ও আহমদ আলীর দীর্ঘদিনের জমি বিরোধ থেকে। স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু বৈঠকে বসার আগেই আহমদ আলীর পক্ষের লোকজন হঠাৎ করে তার ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। রফিকুল ইসলামের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনায় ফেটে পড়ে গ্রামবাসী। তাঁরা হামলাকারীদের বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ গৌরীপুর সেনা ক্যাম্পের সহায়তা চায়। রাতেই সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আহমদ আলীর বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রসহ ১০ জনকে আটক করে।
আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বড় রামদা, ছুরি, চাপাতি, বল্লম, চাকু, লাঠিসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র। অভিযানের সময় তাদের একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. ওবায়দুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র ও হামলার একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় নতুন একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি বলেন, “আইনের বাইরে কেউ যাবে না, হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বড় ডাংরি গ্রামে। স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে স্বস্তি পেলেও হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনার পর থেকেই পুরো গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জারি রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় প্রশাসনও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।