
মওলানা কছিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি থাকা সত্ত্বেও সেখানে ক্লাস করতে পারছে না বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। ১৯৮০ সালে বিদ্যালয়ের পিছনে প্রায় এক বিঘা জায়গার উপর কৃষি বিভাগ একটি চাউলের গোডাউন নির্মাণ করে। এরশাদের শাসনামল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই গোডাউনে এক বস্তা চাউলও ওঠানো বা নামানো হয়নি। চাউল মজুদের বদলে কিছু প্রভাবশালী মহল মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গোডাউনটি নিজেদের দখলে রেখে আসছে। ফলে বর্তমানে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এর ১০ ইঞ্চি দেয়াল যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পরিত্যক্ত এই গোডাউনটির ভেতরে শিয়াল, সাপ, পোকামাকড়, ব্যাঙ, মশা, মাছি সহ নানা বিষাক্ত প্রাণী ও ক্ষতিকারক পোকামাকড় আশ্রয় নিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে এসব পোকামাকড়ের কামড়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি ফরহাদ হোসেন বলেন, "আমাদের বিদ্যালয়ের জায়গায় অবৈধভাবে কৃষি বিভাগ গোডাউন নির্মাণ করে রেখেছে, যা কখনো ব্যবহার করা হয়নি। অথচ ১৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের সংকট মেটাতে পারছি না। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।"
বিদ্যালয়টি ২০২২ সালে জাতীয় পর্যায়ে খেলাধুলায় চ্যাম্পিয়ন হলেও মেয়েদের জন্য কোনো হাইজিং বা কমন রুমের ব্যবস্থা নেই। ফলে মেয়েরা যত্রতত্র বসে থাকে, যা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহীন আক্তার বলেন, "৮৬ সালের পর থেকে আজ ২০২৫ সাল, তিন যুগ পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনো আমাদের নিজস্ব জায়গা ফিরে পাইনি। জায়গার সংকটে রুম নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়ের পড়াশোনা ও খেলাধুলার মান নিম্নগামী হবে।"
বিদ্যালয়টির সভাপতি তবিবুর রহমান ফরহাদ আরো অভিযোগ করেন, "আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর পাবনা জেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত ক্লাসরুম ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারছে না শিক্ষা কর্মকর্তারা। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমরা সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।"
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের জায়গাটি উদ্ধার করে শিক্ষার উপযোগী পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন।