Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল মাঠে হামলার প্রতিবাদ সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্...

জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল মাঠে হামলার প্রতিবাদ সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের

January 29, 2025 06:54:23 PM   অনলাইন ডেস্ক
জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল মাঠে হামলার প্রতিবাদ সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল ম্যাচ আয়োজনস্থলে তৌহিদী জনতা নামে একটি গোষ্ঠীর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম। সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিলরুবা নূরী এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের বিচারের দাবি করেছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “নারী ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করার এই চেষ্টা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নারীদের ঘরে বন্দী রাখতে নানা অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। গণঅভ্যুত্থানের পর তথাকথিত অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির নামে এসব সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আরও প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এর ফলেই তারা একের পর এক নারী বিদ্বেষী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে-মাজার ভাঙচুর, মেয়েদের পড়াশোনায় বাধা, অভিনেত্রীদের শো-রুম উদ্বোধনে বাধা, পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তনের দাবি এবং সর্বশেষ নারী ফুটবল ম্যাচ পণ্ড করার চেষ্টা।”

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “তৌহিদী জনতা নামের এই গোষ্ঠী জনগণের ন্যায্য দাবিতে কখনো সরব হয় না, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায় না, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে না। কিন্তু নারীদের শিক্ষার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে সর্বদা তৎপর। কারণ তাদের দৃষ্টিতে নারী শুধু ভোগের বস্তু, তার ব্যক্তি ও সামাজিক মর্যাদাকে তারা স্বীকার করতে চায় না।”

তারা আরও বলেন, “দেশের মানুষ কখনোই এই পশ্চাৎপদ চিন্তাধারাকে প্রশ্রয় দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দেবে না। নারী ফুটবল দল যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনে, তখন দেশের জনগণ তাদের ভালোবাসায় সিক্ত করে এবং তাদের প্রতি বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদ জানায়।”

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “নারী ও পুরুষ মিলেই সমাজ। নারী মুক্তির পথিকৃত বেগম রোকেয়া নারী ও পুরুষকে সমাজের দুটি চাকার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নারীকে পিছিয়ে রাখলে সমাজ এগোবে না। আজ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গার্মেন্টস খাতে নারীর সংখ্যা বেশি। কৃষি, নির্মাণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা ভূমিকা রাখছেন। এত অগ্রগতি সত্ত্বেও এখনো নারীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু নারী মুক্তির সংগ্রাম চলবে, সাম্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। সেই অভ্যুত্থানের চেতনা ছিল বৈষম্য দূর করে একটি সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন। অথচ আজ নারীর বিকাশের পথে নানা বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে নতজানু ভূমিকা নিচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, অবিলম্বে এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, অন্যথায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।”

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান এবং মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।