হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটিশরা যখন ভারতবর্ষকে আপাত ‘স্বাধীনতা’ দিয়ে চলে গেল, তখন দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে তৎকালীন হিন্দু-মুসলিম নেতারা পরস্পর বিদ্বেষ প্রসূত হয়ে মুসলমানদের জন্য স্বাধীন আবাসভূমি হিসেবে পাকিস্তান কায়েম করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তানের শাসকরা আল্লাহর বিধান প্রবর্তন করেনি। যে কারণে মানুষের আশা আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের মুসলিম নেতারা তখনও ব্রিটিশদের চাপিয়ে দেওয়া সেই কেরানি তৈরি ও প্রশাসন পরিচালনার অসম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থাই আমাদের দেশে চালু রাখলেন, স্বাধীন দেশেও তারা আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা প্রয়োগ করলেন না।
সেই থেকে এখন পর্যন্ত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগের প্রবর্তিত বিধি-বিধান ও সিস্টেমেই আমাদের দেশ চলছে, আর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অন্যায়, অবিচার, অশান্তি, লুটপাট, টাকা পাচার, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, খুন, গুমও বেড়ে চলেছে। যুগের পর যুগ আমরা মানবরচিত বিধানের মাশুল দিচ্ছি।
৪৭’ এর পরে ২৩ বছর ব্যাপক সংঘাত, সংঘর্ষ, বঞ্চনা, বৈষম্য ইত্যাদির অভিযোগ তুলে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি আলাদা হয়ে যায়। যদিও পাকিস্তানকে খণ্ডিত করার পেছনে অনেকে ভারতের ভূমিকাকে দায়ী করেন, আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদীদের দায়ী করেন। যাই হোক, ৭১’ এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়।
দেশ স্বাধীন হবার পর ৭২’ সালে সংবিধান রচিত হয়েছে। এই সংবিধানের রচয়িতারাও আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হবে; এখানে সাম্য, সুখ, শান্তি, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু হয়নি। মানুষ আবারও হতাশ হয়েছে।
স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এদেশে বহু ধরনের সরকার গঠিত হয়েছে। কোনোটা সামরিক, কোনোটা একনায়কতান্ত্রিক, কোনোটা গণতান্ত্রিক। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন কোনো সরকার ব্যবস্থাতেই ঘটতে দেখা যায়নি। এখন ৫৩ বছর পর এসে ছাত্রজনতা একটা বিপ্লব সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে বিগত সরকারকে বিতাড়িত করে বৈষম্যবিরোধী একটা বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছে।
অর্থাৎ স্বাধীনতার যুদ্ধ চলছেই। এজন্যই জুলাই অভ্যুত্থানকে অনেকে বলছেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। সেই হিসেব করলে, স্বাধীনতা ৪৭’ শে একবার হলো, ৭১’ এ একবার হলো আবার ২৪’ এসে আরেকবার হলো। সংগ্রাম চলছে, কিন্তু শান্তি আসছে না। ইতোমধ্যে সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে, তাও শান্তি আসছে না।
অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছাত্রজনতার প্রতিনিধি হিসেবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব আসে। অনেকে বলছে, রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে, প্রয়োজনে পুনরায় সংবিধান লিখতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও একটি বৈষম্যহীন, অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি, অপরাজনীতিমুক্ত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের চেতনা তীব্রতর হয়, যেটা পূর্বেও ছিল কিছু পরিমণ্ডলে। তারই প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রসংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সবাই মিলে সুখী-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের নিমিত্তে ড. ইউনূস সবার মতামত চান। বিভিন্ন দল, সংগঠন তাদের মতামত, প্রস্তাব পেশ করেন সরকারের নিকট।
এরপর কমিশনও গঠন করেছে সরকার। প্রথম ধাপে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্থার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন এই ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। যারা ইতোমধ্যে তাদের সুপারিশনামা সরকারের কাছে পেশ করেছেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবনায় জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাদ দিয়ে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছেন। সংবিধান সংশোধনের জন্য গণভোটের বিধান পুনর্বহালের প্রস্তাবও করেছে এই কমিশন। এছাড়াও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট চালু করার জন্য সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে প্রস্তাব করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তনের। একই সঙ্গে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানের বিতর্কিত ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছে এই কমিশন।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ নেতৃত্বাধীন সংস্কার প্রস্তাবে বেশ কিছু মৌলিক সংস্কারের কথা এসেছে। বল প্রয়োগ, আটক, গ্রেফতার, তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, মানবাধিকার, প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক বাহিনী গঠন, থানায় জিডি রেকর্ড, মামলা রুজু, তদন্ত ও ভেরিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। বেআইনি সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের শক্তি প্রয়োগের সীমা নির্ধারণ, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার ও আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা চেয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বাহিনী সংস্কারের জন্য ২২টি আইনের সংশোধন ও পরিমার্জনও চেয়েছে এই কমিশন।
সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও। কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার না ভোটের বিধান চালু, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ কিংবা নির্দলীয় প্রতীকে ভোটের মতো বিষয়ও সুপারিশ করেছেন প্রস্তাবনায়।
বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান আইনজীবীসহ অংশীজনের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা, বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনা, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততর করাসহ এই বিভাগের নানা পর্যায়ে সংস্কারের সুপারিশ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি এবং কমিশনকে তিন সদস্য থেকে বাড়িয়ে পাঁচ সদস্যে উন্নীত করাসহ ৪৭টি সুপারিশ করেছে ইফতেখারুজ্জামান নেতৃত্বাধীন দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন।
আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী নেতৃত্বাধীন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দেশকে ৪টি প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশসহ ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে। ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ও পরিষেবার ব্যাপ্তির কথা বিবেচনায় রেখে নয়া দিল্লির মতো ফেডারেল সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ বা ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
দ্বিতীয় ধাপে ৩ অক্টোবর ২০২৪ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন, শ্রম সংস্কার কমিশন এবং নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন এই ৫ টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। যার প্রতিবেদন এবছর নভেম্বরে পেশ করার কথা রয়েছে।
অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ আল্লাহর দেওয়া সঠিক জীবনব্যবস্থা নিয়ে ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রগঠনে আমাদেরও দায় রয়েছে। সরকারের মতামত চাওয়ার ভিত্তিতে আমরাও আল্লাহর নাম নিয়ে রাষ্ট্রসংস্কারে একটি প্রস্তাবনা পেশ করেছি। তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরেছি আমরা। এ প্রস্তাবনায় আমরা রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি হিসাবে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব তথা তওহীদকে গ্রহণ করেছি। মহানবী (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদুনের আদর্শকে আমরা রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনার মডেল হিসাবে অনুসরণ করেছি। পাশাপাশি আমরা পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক দর্শন, এই উপ-মহাদেশের কৃষ্টি, জীবনধারা, মূল্যবোধ, ঐতিহ্য এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করেছি। তারমধ্যে যেগুলো আল্লাহর নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও কল্যাণকর সেগুলো গ্রহণ করেছি। এভাবে, আমাদের দেশের চলমান সংকট নিরসনে একটি যৌক্তিক, বিজ্ঞানসম্মত, আধুনিক এবং ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরেছি।
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান কমিশনার অধ্যাপক আলী রিয়াজের কার্যালয়ে ৪৯টি বিষয়ের উপর লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। এরপর ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে তুলে ধরা হয় এই প্রস্তাবনা। এবং পরবর্তীতে অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ এ এই প্রস্তবনাটি বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
আমরা হেযবুত তওহীদ বলছি - আর কালবিলম্ব না করে আসুন এবার ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগের সিস্টেম পরিবর্তন করে আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা (দীনুল হক) আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনে সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা করি, তবেই আমাদের জীবনে পরিপূর্ণ শান্তি আসবে। আল্লাহর দেওয়া বিধানগুলো অত্যন্ত মানবিক, প্রাসঙ্গিক, যৌক্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক। উপরন্ত অত্র অঞ্চলের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, আশা-আকাক্সক্ষা ও চাহিদার সাথেও সঙ্গতিশীল। কাজেই আমরা জনগণ, সরকার, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, চিন্তাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক, শ্রমিক সকলকে আমাদের প্রস্তাবনা বিবেচনা করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আল্লাহর দেওয়া তওহীদভিত্তিক আধুনিক জীবনব্যবস্থার রূপরেখা কী হবে তা আমরা এই প্রস্তাবনায় তুলে ধরেছি। তবে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বর্তমানে চলমান সকল প্রক্রিয়াই পরিত্যাজ্য, এমনটি আমরা মনে করি না। বরং, আমরা বিশ্বাস করি যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের বিভিন্ন নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে এবং নিত্য পরিবর্তনশীল পরিবেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নতুন পরিচালনার পন্থা ও বিধি-বিধানের বিকাশ ঘটেছে। তবে আমরা শুধু সেই সমস্ত বিধানগুলোকেই পরিত্যাজ্য মনে করি, যেগুলি আল্লাহর কেতাব কোর’আনে বর্ণিত মূলনীতির বিরুদ্ধে যায় এবং সময়ের বিবর্তনে আবেদন হারিয়েছে। তাই চলমান ব্যবস্থাগুলোতে প্রচলিত যে বিধি-বিধানগুলো আল্লাহর কেতাবের মূলনীতিকে লংঘন করে না, সেগুলো প্রয়োজনবোধে গ্রহণ করতে কোনো বাধা নেই।
ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পরিবার টাঙ্গাইলের করটিয়ার পন্নী পরিবার। অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী এই পরিবারে ১৯২৫ সনের ১১ মার্চ শবে বরাতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর চরিত্রে ছিল আধ্যাত্মিক ও জাগতিক গুণাবলীর অপূর্ব সংমিশ্রণ। তিনি ছিলেন সত্যের মূর্ত প্রতীক। ঘটনাবহুল ৮৬ বছরের জীবনে তাঁর একটি মিথ্যা বলারও নজির নেই।
সুলতানী যুগে গৌড়ের সুলতান (কররানি যুগ) হিসাবে, মুঘল আমলে আতিয়া পরগনার সুবেদার হিসাবে এবং ব্রিটিশ যুগে করটিয়ার সুবৃহৎ এলাকার জনদরদি জমিদার হিসাবে এই ঐতিহ্যবাহী আফগান পন্নী পরিবার শাসনকার্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলার সালতানাতকে মুঘল আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে গিয়ে সুলতান দাউদ খান কররানি ঐতিহাসিক রাজমহলের যুদ্ধে (১৫৭৬) প্রাণ উৎসর্গ করেন। বাংলার মুসলমানদের নবজাগরণে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল পন্নী জমিদারগণ। এমামুয্যামানের প্রপিতামহ হাফেজ মাহমুদ আলী খান পন্নী তাঁর প্রতিষ্ঠিত ছাপাখানা ‘মাহমুদিয়া যন্ত্র’ থেকে মৌলভী নইমুদ্দিন অনূদিত পবিত্র কোর’আনের প্রথম বঙ্গানুবাদ (২৩ পারা) প্রকাশ করেন। এই ছাপাখানা থেকেই তিনি প্রকাশ করতেন ‘আখবারে এসলামীয়া’ নামে মাসিকপত্র যা বাংলার মুসলমানদের স্বার্থরক্ষার পক্ষে কথা বলত। প্রাচ্যের আলীগড় বলে খ্যাত ‘সা’দাত কলেজের’ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ওয়াজেদ আলী খান পন্নী। তিনি প্রভিন্সিয়াল মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি। এমন কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা এবং অর্থদাতা নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ছিলেন এমামুয্যামানের মায়ের নানা।
লেখক: এমাম, হেযবুত তওহীদ।