Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / বিশেষ নিবন্ধ / নারীরা কি ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে? - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

নারীরা কি ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে?

July 01, 2024 02:58:04 PM   অনলাইন ডেস্ক
নারীরা কি ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে?

আদিবা ইসলাম:
ইসলামের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘নামাজ’। গুরুত্ব বিবেচনায় ইসলামের প্রথম স্তম্ভ কালেমার পরই নামাজের অবস্থান। আল্লাহ কোরআনে মুসলমানদের জন্য যত বিধান দিয়েছেন তার সবই দিয়েছেন মুসলমান নর-নারী উভয়ের জন্যই। কোনো বিধান যদি তিনি বিশেষ কোনো শ্রেণীর ব্যাপারে দিয়ে থাকেন সেটা শুরুতেই উল্লেখ করে দিয়েছেন। যেখানে তিনি এভাবে উল্লেখ করেন নি সেটা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই দিয়েছেন। নামাজের ব্যাপারে সুরা আরাফের ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, O Children of Adam! Wear your beautiful apparel at every time and place of prayer. “হে আদম সন্তানেরা! তোমরা সালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়ার সময় উত্তম পোশাক পরবে।” (সুরা আরাফ, ৩১)। খেয়াল করুন, এখানে নামাজের উদ্দেশ্যে আল্লাহ কেবল পুরুষদেরকে মসজিদে যেতে বলেন নি, সম্বোধন করেছেন ‘হে আদমসন্তান’, যার মধ্যে নারী ও পুরুষ উভয়েই পড়ে। এই হুকুম স্বয়ং আল্লাহর, সুতরাং এ বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এজন্যই মদিনায় হিজরত করে রসুল (সা.) মসজিদে নববী স্থাপন করে সেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জাতির সকল সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছিলেন। এটা প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস যে রসুলাল্লাহর যুগের মো’মেন নারীরা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত মসজিদে পুরুষদের সঙ্গে একই জামাতে কায়েম করতেন। শুধু দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেই নয়, জুমার নামাজে, ঈদের নামাজে, জানাজার নামাজে, আলোচনা সভায় সর্বক্ষেত্রে মুসলিম নারীরা পুরুষের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করতেন। এ সময় নারী-পুরুষের কাতারের মাঝখানে কোনো দেয়াল বা পর্দা দিয়ে তাদের আলাদা করা হত না। বরং পুরুষদের শেষ কাতারের পরেই সরাসরি নারীদের প্রথম কাতার ছিল।

কিন্তু বর্তমানে আমাদের সমাজে মসজিদে কেবল পুরুষদেরকেই দেখা যায়। আমাদের জন্মের পর থেকে বংশ পরম্পরায় আমরা দেখে আসছি, মসজিদভিত্তিক কোনো কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ নেই। নারীরা যেন মসজিদের আঙিনাতেও না আসতে পারে সেজন্য অনেক মসজিদে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে লেখা হয় যে, ‘মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ’। কিন্তু রসুলাল্লাহর যুগ থেকে মসজিদে নববীতে আজও নারী ও পুরুষরা একই জামাতে সালাহ কায়েম করে আসছেন। মক্কার মসজিদুল হারামেও নারী-পুরুষ একত্রেই সালাহ করছেন, হজ্ব করছেন, ঈদের জামাতে অংশ নিচ্ছেন। এই প্রচলন সেই রসুলাল্লাহ ও খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগ থেকে ধারাবাহিক হয়ে আসছে। অথচ প্রত্যেক ঈদের জামাতে আমাদের মসজিদগুলো নারীদের নামাজে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ দেওয়া হয় না। ‘নারীরা মসজিদে যেয়ে পুরুষের পাশাপাশি জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারে’ এ বিষয়টিও অধিকাংশ নারীর অজানা। অথচ আমরা ইতিহাসে দেখি, ঈদের জামাতেও রসুলাল্লাহ (সা.) মসজিদে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন।  

উম্মু আতিয়্যাহ (রা.) বলেন, “ঈদের দিন আমাদের বের হবার আদেশ দেয়া হত। এমন কি আমরা কুমারী মেয়েদেরকেও অন্দর মহল হতে বের করতাম এবং ঋতুবতী মেয়েদেরকেও। তারা পুরুষদের পিছনে থাকতো এবং তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর বলতো এবং তাদের দু’আর সাথে দু’আ করত- সে দিনের বরকত এবং পবিত্রতা তারা আশা করত।” (সহীহ বোখারি)

তিনি আরো বলেন, “দুই ঈদের দিনে ঋতুবতী ও পর্দানশীন মহিলাদেরকে মুসলিমদের জামা’আতে ও দু’আয় অংশ নিতে বের করে নেবার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো। তবে ঋতুবতীগণ যেন সালাতের জায়গা হতে সরে বসেন। একজন মহিলা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ রসুল! আমাদের কারো কারো ওড়না নেই। তিনি বললেন, তাঁর সাথী-বান্ধবী তাঁকে আপন ওড়না প্রদান করবে। (বোখারি, মুসলিম)।

পাঠক, উপরোক্ত হাদিস দুটো খেয়াল করুন। এখানে কি দেখা যাচ্ছে? রসুলাল্লাহ (সা.) প্রতিটি সামাজিক ও জাতীয় কার্যক্রমে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। নারীদের শরীয়া ওজর থাকলেও তিনি কোনো জাতীয় কার্যক্রম থেকে তাদের অংশগ্রহণকে বিরত রাখেন নাই। অথচ আজকে হাজার বছর ধরে আমাদের সমাজে চলছে তার বিপরীত চিত্র। মসজিদগুলোতে নারীদের প্রবেশাধিকার নেই। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা জুমার নামাজে তো নেই-ই। ঈদের জামাতের মতো একটি জাতীয় কার্যক্রমে মসজিদে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। বরং তাদের এটাই শেখানো হচ্ছে যে,‘নারীরা মসজিদে গেলে পর্দা লঙ্ঘন হবে, ঈমান নষ্ট হবে তাই ঘরে নামাজ পড়াই নারীদের জন্য উত্তম’। কোনো নারী যদি সমাজের এই প্রচলিত ধ্যান-ধারণা, রীতিনীতিকে উপেক্ষা করে মসজিদে প্রবেশ করতে চায় তবে তাকে ফতোয়ার বাণে জর্জরিত করা হয়। মসজিদে প্রবেশ করা বা নামাজ আদায় করাটাই তার জীবনের সবচেয়ে বড় পাপ মনে করা হয়। কথা হলো, ইসলামের এই সহজ সরল বিধান নিয়ে দ্বিমুখী বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হলো কেন?

প্রথম কথা হচ্ছে, ইসলামের যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সবার প্রথমে আমাদের ঠিক করতে হবে জায়েজ/নাজায়েজের মানদণ্ড কোনটা? নিঃসন্দেহে আল্লাহ কোরআনে যা বলেছেন এবং রসুল (সা.) তাঁর সমগ্র জীবনে যা করে গেছেন সেটাই হচ্ছে ইসলামের মানদণ্ড। এর বাইরে বা এর বিপরীতে অন্য কেউ যদি ইসলামের বিষয়ে কোনো ব্যাখা দাঁড়া করায় সেটা ইসলাম হবে না। মসজিদে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে কোরআনে কোথাও কি আল্লাহ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন? কিংবা রসুলাল্লাহ (সা.) কি নারীদের মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছেন? রাখেন নি। এমন একটি ঘটনা বা আয়াতও কেউ দেখাতে পারবেন না। বরং মসজিদে নববীতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের মসজিদভিত্তিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অসংখ্য উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। এরমধ্যে দুটি ঘটনা আমি উপরে উল্লেখ করেছি। কথা হচ্ছে এমন সুস্পষ্ট নিদের্শ থাকা সত্ত্বেও কেন আমাদের আলেম-ওলামারা বর্তমান যুগে নারীদের মসজিদে যেতে বাধা দেয়? এর পিছনে তারা দুটো যুক্তি উপস্থাপন করেন।

প্রথমত, তারা বলেন, ফেতনার যুগে নারীদের মসজিদে যাওয়া যাবে না। যেমন মুহাদ্দিস মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘ইসলামের প্রাথমিক যুগে রাসুলাল্লাহ (সা.) নারীদেরকে জামাতে শরীক হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন, তা মূলত শর্তসাপেক্ষে ছিল। সেখানে বর্তমান যুগের মতো নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও ফিতনা-ফাসাদের ভয় ছিল না। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ফিতনা-ফাসাদের আশঙ্কা থাকার দরুন নারীদের জন্য মসজিদে না যাওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। সুতরাং বর্তমানে নারীদের মসজিদের জামাতে উপস্থিত হওয়ার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না’। পাঠক, লক্ষ করুন, এখানে তিনি কী বললেন? তিনি বললেন যে, বর্তমান যুগ যেহেতু ফেতনার যুগ তাই নারীরা মসজিদে গেলে ফেতনা ফাসাদের আশঙ্কা হবে। সুতরাং নারীদের মসজিদে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

কথা হচ্ছে, এখনকার যুগ কি রসুলাল্লাহর যুগের চেয়েও বেশি ফেতনার যুগ? আপনারাই তো ওয়াজ মাহফিলে বলেন, রসুলাল্লাহ (সা.) যখন আরব সমাজে এসেছিলেন তখন সেই সমাজ ছিল আইয়ামে জাহিলিয়াতের সমাজ। সেখানে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না, তাদেরকে জীবন্ত কবর দেওয়া হত। সেই সমাজে এসে তো রসুলাল্লাহ (সা.) বললেন না যে, সাহাবিরা শোনো, এখন সময় খারাপ, ফেতনার যুগ। কাজেই নারীদের মসজিদে নেওয়া যাবে না, নিলে ফেতনা হবে। কোথায় এমন কোনো কথা তো তিনি বললেন না। বরং তিনি করলেন উল্টোটা। ফেতনার যুগেই তিনি নারীদের ঘর থেকে বের করে এনে নারী-পুরুষ সবাইকেই মসজিদে নিলেন। নারীদেরকে সাহসী যোদ্ধা, বীরাঙ্গনায় পরিণত করলেন। তারপর সেই নারী পুরুষরাই সংগ্রাম করে আরবের সবচাইতে ফেতনার যুগকে পরিবর্তন করে ভালো যুগে পরিণত করে ফেললেন। অথচ আমাদের আলেমরা গত হাজার বছর যাবত, ফেতনার যুগ বলে বলে নারীদের মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছেন। কথা হচ্ছে, ফেতনা তো থাকবেই, সেই ফেতনার যুগকে পরাজিত করেই তো আল্লাহর রসুল (সা.) ইসলামী যুগ কায়েম করেছিলেন। এজন্যই আল্লাহ বলছেন, আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাকবে যতক্ষণ না ফেতনা দূর হয় (সুরা আনফাল ৩৯)। তাহলে আপনারা কোরআন জানেন, হাদিস জানেন, ইতিহাস জানেন আপনারাও রসুলের (সা.) মতো ফেতনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন। ফেতনার বিরুদ্ধে লড়াই করে সমাজ থেকে ফেতনা দূর করেন। মেয়েদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দিতে চান কেন?        

দ্বিতীয়ত, তাদের সামনে যখন এসব হাদিস-ঘটনা তুলে ধরা হয় তখন তারা কোনো উত্তর খুঁজে না পেয়ে বলেন যে, ঠিক আছে মসজিদে নারীরা যেতে পারবে তবে সেটা হতে হবে নারীদের জন্য আলাদা মসজিদ। পুরুষদের থেকে পৃথক করে নারীদের জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করতে হবে। সেখানে নারীরা আপাদমস্তক আবৃত করে যাবেন এবং পুরুষ মুসল্লীর কোনো প্রবেশাধিকার সেখানে থাকবে না। এভাবে আলাদা নামাজের ব্যবস্থা থাকলেই কেবল নারীরা মসজিদে যেতে পারবে। প্রশ্ন হচ্ছে, নারীদের জন্য এমন আলাদা নামাজের ব্যবস্থা তৈরির বিধান তারা কোথায় পেল? এমন কোনো কথা কি রসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন? বরং আমরা ইতিহাসে দেখি, মসজিদে নববীতে নারী-পুরুষ একত্রে রসুলাল্লাহর (সা.) সাথে নামাজে অংশগ্রহণ করতেন। তারা একসাথে রসুলাল্লাহর (সা.) সামনে বসে আলোচনা শুনতেন। এসময় তাদের মাঝে কোনো কাপড় বা পর্দা থাকত না। নারীদের আলাদা বা বিচ্ছিন্ন রাখার কোনো পদ্ধতি ছিল না।

এই প্রসঙ্গে দুটি ঘটনা উল্লেখ করছি, প্রসিদ্ধ নারী সাহাবি আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলেন, আমাদের মধ্য থেকে রসুলাল্লাহ উঠে দাঁড়ালেন এবং আমাদের উদ্দেশ্য বক্তব্য প্রদান করলেন। তিনি বললেন, আসল ফিতনা হলো যা কোনো মানুষের কবরে ঘটে থাকে। কথাটি বলার পরেই লোকজন আওয়াজ করতে লাগলো। ফলে রসুলের শেষ কথাটি বুঝতে আমার সমস্যা হয়েছিল (সহিহ বোখারি, জানাজা অধ্যায়, ৩/৪৭৯)। তারপর লোকেরা নীরব হলে আমি আমার কাছের পুরুষ সাহাবিকে বললাম, “আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন! রসুল (সা.) তাঁর বক্তব্যের শেষে কী বলছিলেন?” পুরুষটি জবাব দিলেন, “রসুলাল্লাহ বললেন, আমার উপর এই মর্মে ওহী অবতীর্ণ হয়েছে, তোমরা কবরে যে ধরনের ফেতনার সম্মুখীন হবে, সেটা দাজ্জালের ফিতনার মতোই।” (বোখারি, নাসায়ী ৭/২০০)।

এরপর ফাতিমা বিনতে কায়েস (রা.) বলেন, “জামায়াতে সালাহ কায়েমের উদ্দেশ্যে মানুষদেরকে আহ্বান করা হলো। তাদের সাথে আমিও নামাজ আদায় করতে গেলাম। আমি ছিলাম নারীদের প্রথম কাতারে এবং আমার কাতারটি ছিল পুরুষদের কাতারের ঠিক পেছনে। রসুলাল্লাহ সালাত শেষে হাসতে হাসতে মিম্বরে বসলেন। তিনি বললেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ সালাতের স্থানে বসে থাকো। তারপর বললেন, তোমরা কি জান, আমি কেন তোমাদের সমবেত করেছি? সবাই বললো, আল্লাহ ও তাঁর রসুলই সর্বাধিক অবগত। তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের কোনো উৎসাহব্যঞ্জক বা ভীতিকর খবরের জন্য সমবেত করিনি। বরং এ উদ্দেশ্যে সমবেত করেছি যে, তামীমে দারী নামক এক ব্যক্তি আমার কাছে এসেছে। সে ছিল একজন খ্রিস্টান। সে আমার কাছে এমন একটি ঘটনা বর্ণনা করেছে যা আমি মাসীহে দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের ইতোপূর্বে যে কথা বলেছিলাম তার সাথে হুবহু মিলে যায়।” (সহিহ মুসলিম, ফিতনা অধ্যায়, ৮/২০৫।)

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে, মসজিদে রসুলাল্লাহর আলোচনা চলাকালে নারী-পুরুষ উভয়েরই অবাধ যাতায়াত ছিল এবং নারীদেরকে সেখানে বিচ্ছিন্ন করে রাখার কোনো পদ্ধতি ছিল না। কাজেই বোঝাই যাচ্ছে, বর্তমানে মসজিদ থেকে নারীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার এই ফতোয়া আমাদের আলেম-ওলামাদের তৈরি করা। ইসলাম নারীদের মসজিদে নামাজ পড়ার বা ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত তো করেই না। বরং নারীদেরকে উৎসাহিত করে। রসুলাল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা আল্লাহর বান্দিদেরকে আল্লাহর মসজিদ থেকে নিষেধ করো না” (আবু দাউদ, সহীহ মুসলিম)। তাই বলা যায়, কোনো ফতোয়া বা প্রতিবন্ধকতার দেওয়াল তুলে নারীদের অবরুদ্ধ করে রাখার  সুযোগ নেই। ইসলাম নারীদের যে অধিকার দিয়েছে সেই অধিকার চর্চার সুযোগ নারীদের দিতে হবে। প্রয়োজনে সমাজব্যবস্থা পাল্টাতে হবে এবং সমাজকাঠামোকে আল্লাহর হুকুম মান্য করার অনুকূলরূপে সাজাতে হবে। কিন্তু ফেতনার দোহাই দিয়ে ইসলামের চিরায়ত বিধি-বিধান পরিবর্তন করে ফেলার কোনো সুযোগ নেই।