
নাটোরের নলডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের পোস্টারিং ও দেয়াল লিখনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের গোপন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। বিশেষ করে দেয়াল লিখনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নলডাঙ্গার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর তারা প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো তৎপরতা চালাচ্ছিল না। তবে সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লাল ও কালো কালিতে “জয়বাংলা” স্লোগান লেখা দেয়াল লিখনের মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি দৃশ্যমান হয়েছে।
বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলীয় নেতাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ বর্তমানে ৮ থেকে ১৫ জনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গোপন তৎপরতা চালাচ্ছে। উপজেলার মাধনগর বাজার, মাধনগর ডিগ্রি কলেজ, শামসুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়, বাজেহালতি ব্রিজ, আনিচ মোড়, বাঁশিলা মাদ্রাসা, বাঁশিলা হাইস্কুল, পাটুল-নলডাঙ্গা সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের দেয়াল লিখনের চিহ্ন দেখা গেছে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম, শিবির নেতা আবু রায়হান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা উজ্জল রহমান, জাহিদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজি আসিকুর রহমান, যুবদল নেতা এনায়েত হোসেনসহ অনেকে অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ গোপনে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তারা প্রশাসনের কাছে এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলো একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। ১৯ জানুয়ারি উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে নলডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মাধনগর ইউনিয়ন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠন বিক্ষোভ মিছিল করে। ২৩ জানুয়ারি বাঁশিলা বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে নলডাঙ্গায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। ১৬ মার্চ রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
বিএনপি নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, "আমরা আইন হাতে তুলতে চাই না, তবে যদি প্রয়োজন হয়, বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে না।"
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর বলেন, "আমরা এমনি বসে থাকি। পারিবারিক আলোচনা হয়, রাজনৈতিক আলোচনাও হয়। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।"
নলডাঙ্গা থানার তদন্ত কর্মকর্তা মনোয়ার জাহান জানান, “আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। কোনো কিছু পরিলক্ষিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বিষয়গুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। খবর পেলেই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”