রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড (বিয়ারিং স্প্রিং) খুলে পড়ে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
নিহত তরুণের নাম আবুল কালাম। তাঁর বাড়ি শরীয়তপুর এবং বয়স আনুমানিক ৩৫ থেকে ৪০ বছর। তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক জানান, বিয়ারিং প্যাডটি ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই ওই পথচারীর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় আবুল কালাম ব্যাগ নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ওপর থেকে বিয়ারিং স্প্রিংটি ছিটকে পড়ে সরাসরি তাঁর মাথায় আঘাত করে। বস্তুটি পাশের একটি চপ-শিঙাড়ার দোকানেও আঘাত হানলে দোকানের সামনের কাঁচ ভেঙে দুজন আহত হন। মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে ওই তরুণ ঘটনাস্থলেই মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, ছিটকে পড়া স্প্রিংটির ওজন ছিল প্রায় ৪০ থেকে ৫০ কেজি।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার কারণে মেট্রোরেলের পুরো পথে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রেন চলাচল কখন স্বাভাবিক হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
ডিএমটিসিএল সূত্র আরও জানিয়েছে, মেট্রোরেলের উড়ালপথের পিলারের সঙ্গে রাবারের এই বিয়ারিং প্যাডগুলো বসানো থাকে। এগুলোর প্রতিটির আনুমানিক ওজন ১৪০–১৫০ কেজি। এগুলো ছাড়া ট্রেন চললে উড়ালপথ স্থানচ্যুত বা দেবে যেতে পারে। তাই নিরাপত্তার কারণেই চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মেট্রোরেলের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেছেন, ফার্মগেটের খেজুরবাগান মোড়ের নির্মাণ নকশায় ত্রুটি রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও এমন দুর্ঘটনা ঘটলেও জাপানিজ ঠিকাদার তা ঠিক করার উদ্যোগ নেয়নি।
উল্লেখ্য, এটি দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ার ঘটনা। এর আগেও গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর খামারবাড়ি এলাকায় একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তখন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল এবং বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।