
বার্সেলোনার ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে আকস্মিকভাবে ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। গত শনিবার লা লিগায় আলমেরিয়ার বিপক্ষে তিনি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলতে নামবেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিওতে পিকে নিজেই অবসরের কথা জানিয়েছেন। অবসর প্রসঙ্গে পিকে বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ, মাসব্যাপী মানুষ আমার সম্পর্কে কথা বলছে। এখন পর্যন্ত, আমি কিছু বলিনি। কিন্তু এখন আমি সেই ব্যক্তি যে নিজেই আমার বিষয়ে কথা বলছি। আপনাদের অনেকের মতো আমিও সবসময় বার্সেলোনার ভক্ত। আমি এক ফুটবল প্রেমী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলার হতে চাইনি, বার্সার হয়ে খেলতে চেয়েছিলাম। সম্প্রতি আমি সেই বাচ্চাটিকে (পিকে নিজে) নিয়ে অনেক ভেবেছি। যদি তাকে বলা হয় যে সে তার সব স্বপ্ন পূরণ করবে যে সে বার্সার হয়ে খেলবে, সে সম্ভাব্য প্রতিটি ট্রফি জিতবে, যে সে ইউরোপীয় এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে। সে ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের সাথে খেলবে, সে দলের একজন অধিনায়ক হয়ে উঠবে। ফুটবল আমাকে সবকিছু দিয়েছে। আপনারা ভক্তরা, আমাকে সবকিছু দিয়েছেন। এখন আমার শৈশবের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আপনাদের বলতে চাই, আমি এখনই ফুটবলের যাত্রাকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সবসময় বলেছি যে বার্সেলোনার পরে আমার আর কোনো দল থাকবে না এবং সেটাই হবে। আগামী শনিবারের ম্যাচটি হবে ন্যু ক্যাম্পে আমার শেষ ম্যাচ।
আমি একজন নিয়মিত ভক্ত হয়ে উঠব, দলকে সমর্থন করব এবং ক্লাবের প্রতি আমার ভালোবাসা আমার বাচ্চাদের কাছে প্রেরণ করব। যেমনটা আমার পরিবার আমার সাথে করেছিল। আপনারা আমাকে চেনেন। শীঘ্রই বা পরে আমি ফিরে আসব। ক্যাম্প ন্যুতে দেখা হবে। ভিসকা বার্সা, সর্বদা এবং চিরকাল। ট্রফি ভরা ক্যারিয়ারে পরিপূর্ণ স্প্যানিশ ফুটবলার বার্সায় যেন অনেকটাই ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন। চলতি মৌসুমে লা লিগায় খেলেছেন পাঁচ ম্যাচ। এর মধ্যে দুটিতে শুরুর একাদশে ছিলেন না।
রোনাল্ড আরাউজো, জুলেস কাউন্ডে, আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন এবং এরিক গার্সিয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন ৩৫ বর্ষী ডিফেন্ডার। বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে কাটিয়েছেন। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের পর পিকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে আগেই অবসর নিয়েছিলেন। স্পেনের হয়ে ১০২টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৫ গোল।
১৯৯৭ সালে বার্সেলোনার যুব একাডেমিতে ১০ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন পিকে। এরপর ২০০৪ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে সুযোগ পান। ২০০৬-০৭ সালে ধারে রিয়াল জারাগোজাতে খেলার পর ২০০৮ সালে আবারো ঠিকানা হয় বার্সেলোনা।
কাতালান ক্লাবটির হয়ে ৬১৫ ম্যাচ খেলে ৫২ গোল করেন তারকা ডিফেন্ডার। ইউরোপিয়ান কাপের ট্রেবল ছাড়াও,তিনি বার্সেলোনাকে আটটি লা লিগা শিরোপা এবং সাতটি কোপা দেল রে মুকুট জিততে ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদও তিনি ফুটবল ক্যারিয়ারে পেয়েছেন। সব মিলিয়ে তার রয়েছে ৩০টি মেজর ট্রফি।