Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / মিথ্যা, গুজব ও অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকুন - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

মিথ্যা, গুজব ও অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকুন

April 27, 2023 10:02:29 PM   বাংলাদেশ
মিথ্যা, গুজব ও অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকুন

হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম:
সচেতন মানুষমাত্রই জানেন- বাংলাদেশের ভোটের রাজনীতিতে ধর্মকে কীভাবে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সামনে আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। ধর্মভিত্তিক দলগুলো এখন ইস্যুর সন্ধানে আছে। কোন ইস্যুতে সহজে লাইমলাইটে আসা যাবে সেই ইস্যু সৃষ্টি করাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এদিকে সরকারবিরোধী গোষ্ঠীও ব্যস্ত আছে কীভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা যায়- সেই উপায় অন্বেষণে। তাদেরও দরকার বার্নিং ইস্যু। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে- এদেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে বরাবরই ধর্মকে ইস্যু বানানো হয়ে থাকে। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে ধর্ম নিয়ে হাজার হাজার ইস্যু সৃষ্টি করা হয়েছে এবং সেই ইস্যুগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের কাজে। 
এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। তারা আল্লাহ ও রসুলকে (সা.) ভালোবাসেন। ইসলামের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ তারা সমর্থন করেন না, বরং মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন। তাদের এই ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকেই বারবার ব্যবহার করে থাকে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী। ‘অমুক ইসলামের দুশমন, অমুক ইসলাম ধ্বংস করে ফেলছে, অমুক ঈমান নষ্ট করে ফেলছে, অমুক ইহুদির দালাল, অমুক নাস্তিক, অমুক মুরতাদ’ ইত্যাদি বলে প্রায়শই মানুষকে উত্তেজিত করে তোলা হয় এবং দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হয়। এসব করে ইসলামের কোনো উপকার কি আজ পর্যন্ত হয়েছে? কেউ দেখাতে পারবেন না। সাময়িকভাবে ওই ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী কিছুটা লাভবান হয়ে থাকে হয়ত, অনেকের সম্পদ ফুলে ফেঁপে ওঠে, কেউ কেউ নেতা বনে যায়, কেউ কেউ নির্বাচনের নমিনেশন পায়, দলের শীর্ষ নেতাদের নেক নজরে আসে, কিন্তু পরিণতিতে নির্দোষ মানুষ প্রাণ হারায়, বাড়িঘর ধ্বংস হয়, দেশের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। আর সমাজে ধর্মীয় অসহিষ্ণু মনোভাব বৃদ্ধি পায়।
অতি সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, হেযবুত তওহীদকে টার্গেট করে তেমনই ইস্যু বানানোর চক্রান্ত হচ্ছে। হেযবুত তওহীদ যেটা বলেনি, করেনি, তেমন কথা বানিয়ে বানিয়ে লিখে হেযবুত তওহীদের নামে চালু করে দিচ্ছে একটি মহল। নামে-বেনামে হ্যান্ডবিল বানিয়ে বিতরণ করে দিচ্ছে এবং রাতের আঁধারে বা গোপনে দেয়ালে দেয়ালে মিথ্যা কথা লিখে পোস্টারিং করে দিচ্ছে, ফেসবুকে ভুয়া ও নাম-ঠিকানাবিহীন প্রোফাইল থেকে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে গুজব রটাচ্ছে, এমনকি বিভিন্ন নামে ভুঁইফোড় সংগঠন তৈরি করে উগ্রবাদী অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এই গোষ্ঠীর অপতৎপরতার ফলে অন্তত চার শতাধিক জায়গায় হেযবুত তওহীদের সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন। পাঁচ জন সদস্য-সদস্যা ইতোমধ্যেই জীবন দিয়েছেন। এই গুজব ও মিথ্যা প্রচারকারীরা ইসলামের লেবাস ধারণ করলেও ইসলামের শিক্ষা তাদের চরিত্রে ধারণ করতে পারেনি, ইসলামের আলোয় নিজেদেরকে আলোকিত করতে পারেনি। তারা জোর করে, ভয় দেখিয়ে, উগ্রবাদী হুমকি দিয়ে, সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হলেও নিজেদের মতবাদ, নিজেদের বিশ্বাস অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চায়।
আল্লাহর রসুল (সা.) তাঁর জীবদ্দশায় কখনোই বিশ্বাসের ক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তি করেননি। তিনি মানুষকে তওহীদের দিকে ডেকে গেছেন অবিরাম, যার ইচ্ছা হয়েছে তাঁর ডাক শুনেছে, আবার যার ইচ্ছা হয়েছে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু আজকের এই ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে দেখা যাচ্ছে- তাদের মতের সঙ্গে কারো মত না মিললেই, তাদের বক্তব্যের সঙ্গে কারো বক্তব্য না মিললেই সঙ্গে সঙ্গে লম্বা তলোয়ার, রামদা, হকিস্টিক, দা, কিরিচ, লাঠি হাতে “জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও” স্লোগান দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে কোপাচ্ছে, রক্তের হোলিখেলায় মেতে উঠছে। এগুলো কোনো ধর্মের শিক্ষা হতে পারে না। কারো সঙ্গে দ্বিমত থাকলে যৌক্তিকভাবে ও দালিলিকভাবে সেটার জবাব দিতে পারে। তারপর চিন্তাশীল মানুষ সিদ্ধান্ত নিবে কার বক্তব্য যৌক্তিক, গ্রহণযোগ্য ও কল্যাণকর। সেটা না করে যখন এরা কথায় কথায় উগ্র হয়ে ওঠে, কথায় কথায় দা-কিরিচ বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন বোঝা যায় এই ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে কোনো যুক্তিই নেই। তারা ডুবে আছে স্পষ্ট ভুলের মধ্যে, কাজেই উগ্রতা ছাড়া নিজেদের ন্যায্যতা দেওয়ার আর কোনো পথ তাদের বাকি নেই। কারো কাছে যখন যুক্তি থাকে না, তখনই সে উত্তেজিত উগ্র হয়ে ওঠে। তার ভেতরের কালো, অন্ধকার রূপটা বেরিয়ে আসে। 
আমরা আশা করব দেশের স্বার্থে, ইসলামের স্বার্থে, জনগণের জান-মাল হেফাজতের স্বার্থে সরকার এই উগ্রবাদী, ধর্মব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। হেযবুত তওহীদকে টার্গেট করে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ইস্যু সৃষ্টির যে হীন চক্রান্তে তারা মেতে উঠেছে, তা চলতে থাকলে শুধু হেযবুত তওহীদই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়বে উগ্রবাদের ভাইরাস। আজ যারা মিথ্যা প্রচার করে, মিথ্যা হ্যান্ডবিল বিতরণ করে মানুষকে উস্কানি দিয়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, কাল তারা অন্য কোনো দলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। তখন চাইলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নাও হতে পারে। কাজেই সরকারের কাছে আহ্বান- এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, কঠোর হাতে এদেরকে আইনের আওতায় আনুন। আর জনগণের কাছে আহ্বান- হেযবুত তওহীদের বক্তব্য শুনুন হেযবুত তওহীদের মুখে। হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে ধর্মব্যবসায়ীরা যা বলে মিথ্যা বলে। আপনারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, সত্য-মিথ্যা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিন। হেযবুত তওহীদের কোনো বক্তব্যে ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন, আমরা হাজারবার সংশোধন করতে রাজি আছি। কিন্তু যেটা আমাদের বক্তব্য নয়, সেটা আমাদের নামে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদ সম্পর্কে আপনারা সতর্ক হোন, সজাগ দৃষ্টি রাখুন। ইনশা’আল্লাহ! ষড়যন্ত্রকারীদের সকল প্রচেষ্টা নস্যাৎ হবে, আল্লাহ তাঁর দীনকে পূর্ণভাবে উদ্ভাসিত করবেন।