
মিরপুর ১১ নম্বরের প্যারিস রোডসংলগ্ন খেলার মাঠটি উদ্ধারের দাবিতে গত সোমবার সেখানে জড়ো হয় নানা বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। সকাল থেকেই বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের দলবদ্ধভাবে এসে মানববন্ধনে যোগ দিতে দেখা যায়। ব্যানার, পোস্টার ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানটি। দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষ করেন মাঠ পুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক।
কাউন্সিলরের দাবি, মানববন্ধনে প্রায় পাঁচ হাজার লোক যোগ দিয়েছে। ৯৭টি স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও অংশগ্রহণ করেছেন ১৬টি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং ২১টি ক্রীড়াচক্রের সদস্যরা।
জহিরুল ইসলাম বলেন, ১৯৬৩ সালে এই স্থানকে খেলার মাঠ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন গণপূর্তমন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিঞা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আবাসিক প্লট হিসেবে তা বরাদ্দ দেন। চিহ্নিত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ৩২ জনকে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়।
খেলার মাঠের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে কাউন্সিলর বলেন, ‘৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় তিন লাখ লোকের বসবাস। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য একটিও মাঠ নেই। এ ছাড়া এখানে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে জরুরি সেবা ও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে একটি হেলিকপ্টার নামার জায়গা নেই। সব দিক বিবেচনায় এই মাঠ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী ও গণপূর্তমন্ত্রীর বিশেষ হস্তক্ষেপ আশা করছি। ’
যুব মহিলা লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফুন্নেছা পারুল বলেন, এ এলাকায় একটিও খেলার মাঠ না থাকায় শিশুরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভিডিও গেমস এবং মোবাইলে আসক্তি বাড়ায় শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উন্মুক্ত স্থানে হাঁটাচলার সুযোগ হারাচ্ছেন বয়োজ্যেষ্ঠরা।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আলফাজ আহমেদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে দেখেছি এ জায়গা নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। মাঠ হিসেবে চিহ্নিত জায়গায় এর আগে বস্তি উঠেছে, এখন ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। এই ওয়ার্ডে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য কোনো খেলার মাঠ নেই। এতে তারা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। মাঠ না থাকায় কেউ কেউ ব্যস্ততম সড়কের ওপর ক্রিকেট খেলছে, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
আরেক স্থায়ী বাসিন্দা রুবেল শেখ জানান, বর্তমানে মাঠটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এখানে সন্ধ্যা হলেই মাদক ও জুয়ার আড্ডা শুরু হয়। এলাকাটির পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।
ন