Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / রংপুরের ঘটনার পেছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে -সুমন - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

রংপুরের ঘটনার পেছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে -সুমন

March 05, 2025 01:06:02 AM   নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুরের ঘটনার পেছনে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে -সুমন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগাছায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলার পেছনে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন হেযবুত তওহীদের সদস্য মুখলেছুর রহমান সুমন। তিনি এই ঘটনার নেপথ্য কার্যক্রম এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সুমন অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় যারা হামলা চালিয়েছে, তারা এক ধরণের উন্মত্ত জনতাকে সংগঠিত করে।

মঙ্গলবার রংপুরে হেযবুত তওহীদের উপর পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন তিনি।

সুমন বলেন, “আমরা সবাই রংপুরের পীরগাছার ঘটনার কথা জানি, তবে অনেকেই জানেন না যে এই ঘটনার পেছনে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। এদিন হামলার ঘটনা শুরু হয় ভোরবেলা, যখন সূর্যের আলোও ঠিকমতো ফোটেনি। মশাল, হারিকেন এবং লাইট হাতে কয়েকশো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা সাধারণ মানুষকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে এবং মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ফিরতে আসা ব্যক্তিদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে দেয়নি। এরপর তারা জনতাকে উস্কানি দিতে শুরু করে, জানিয়ে দেয়— ‘হেযবুত তওহীদ মহানবীকে অবমাননা করেছে, কটূক্তি করেছে।”

তিনি হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তোমরা আমাদের ওপর হামলা চালালে, আমাদের ভাইদের রক্তাক্ত করলে, আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিলে, আজ এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে, আমরা তোমাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই— আমাদের অপরাধ কী? আমরা তো হেযবুত তওহীদ করি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্যই! তাহলে বলো, আমাদের কোন নেতা, কোন বক্তব্যে, কখন নবীকে কটূক্তি করেছে? আমাদের সামনে প্রমাণ দাও, দলিল দাও! যদি প্রমাণ দিতে পারো, তাহলে আমরা তওবা করতে রাজি আছি। কিন্তু সত্যি কথা কী? সত্য হলো, তোমাদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই।”

এছাড়া, তিনি হামলাকারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে বলেন, “মসজিদের মাইক ব্যবহার করে তোমরা মিথ্যা প্রচার চালিয়েছ -‘হিন্দুরা মুসলমানদের ওপর হামলা চালিয়েছে, খ্রিস্টানরা আক্রমণ করেছে।’ অথচ রংপুরের হেযবুত তওহীদের কোন পরিবার হিন্দু? কোন পরিবার খ্রিস্টান? তোমরা অপপ্রচার চালিয়ে বললে— ‘হেযবুত তওহীদ নবীকে মানে না, শেষ নবী মানে না, তারা ইসাকে নবী বলে, বায়াজীদ খান পন্নীকে নবী বলে।”

সুমন প্রশ্ন করেন, “তোমরা এত বড় মিথ্যা কথা বলে মানুষের রক্ত গরম করে, তাদের উন্মত্ত বানিয়ে নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিলে! আল্লাহর কাছে কি এর জবাব দিতে হবে না? মরতে হবে না? কবরে যেতে হবে না?" তিনি আরও বলেন, "আজ আমরা এই ময়দানে, প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে জবাব চাই— আমাদের নেতা কবে নিজেকে নবী দাবি করেছেন? কোন বক্তব্যে আমরা শেষ নবীকে অস্বীকার করেছি? আমরা প্রমাণ চাই, জবাব চাই!”

এছাড়া, সুমন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “এত মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হলো, বাবার বয়সী মানুষদের পিটিয়ে তাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হলো, অথচ প্রশাসন একটি লাঠিচার্জও করল না, জলকামান ব্যবহার করল না, এমনকি একটি হুইসেলও বাজাল না! কেন? কীসের জন্য? প্রশাসন, আমরা জবাব চাই! পুলিশের দায়িত্ব কি শুধু চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখা? সেনাবাহিনী, আপনারা কোথায় ছিলেন? বাংলাদেশ কি তাদের ইজারায় দিয়ে দিয়েছেন? বাংলাদেশের ঠিকাদারি কি তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন?”

তিনি ২৪ সালের বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের কথা স্মরণ করে বলেন, “আমরা জানতে চাই, সেই স্বাধীনতা আজ কারা ভোগ করছে? আমাদের শ্রদ্ধেয় সেনাপ্রধান দেশকে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে যেন না বলতে হয় সতর্ক করিনি।’ আজ আমরা হেযবুত তওহীদ থেকে প্রশাসনকে সতর্ক করে দিতে চাই— এই ধর্মব্যবসায়ীরা, এই উগ্রবাদীরা কালসাপের মতো বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছে।”

সুমন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “আজ যাকে ইসলামের বন্ধু বলে, কাল তাকেই ইসলামের শত্রু বানিয়ে ফতোয়া দেয়। তারা মানুষের মাথার দাম নির্ধারণ করে, কাফের ঘোষণা দেয়। আমাদের রংপুরের ভাইদের ঘরবাড়ি যারা পুড়িয়েছে, একদিন সেই আগুন তোমাদের ঘরেও আসবে- প্রস্তুত থাকো! কারণ, এই আগুনের কোনো ধর্ম নেই।”