
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটেছে। আসাদ পরিবারের ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের শাসনও শেষ হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে বড় ধরনের পরিবর্তন আনল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার জনগণ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পরও নতুন আশায় জেগে উঠেছে। বিদ্রোহী জোট হায়াত আল-তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে সিরিয়ার ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে, যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও রাশিয়ার প্রভাব কমে গেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মিখাইল উলিয়ানভ জানিয়েছেন, মস্কো আসাদকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে। আসাদের পতনকে বিশ্বের অনেক দেশ স্বাগত জানিয়েছে, এবং তারা মধ্যপ্রাচ্যের নতুন পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছে।
এইচটিএস এখনও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তারা তাদের ভাবমূর্তি কোমল করার চেষ্টা করেছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে, এবং শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। বিদ্রোহীদের এখন এই দেশটি পুনর্গঠন ও শাসন করার গুরুতর দায়িত্ব পালন করতে হবে।
রোববার দামেস্কের উমাইয়া মসজিদে বিশাল জনসমাবেশে এইচটিএসের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি ঘোষণা দেন, “সিরিয়া ইসলামিক জাতির জন্য একটি বাতিঘর হয়ে উঠবে।”
বিদ্রোহীরা দামেস্কে কারফিউ জারি করেছিল এবং শহরটি রাতভর শান্ত ছিল। রোববার কিছু দোকানে লুটপাট ও আসাদের প্রেসিডেন্ট ভবনে হামলা চালানো হয়। এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশের পুনর্গঠন ও ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য এক অন্তর্বর্তী শাসকবর্গ গঠন করার পরিকল্পনা করছে।
আসাদ ক্ষমতা হারানোর পর ইরানের অস্ত্র সরবরাহের সুযোগ সীমিত হয়ে গেছে এবং রাশিয়া তার ভূমধ্যসাগরীয় নৌ-ঘাঁটি হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে, নতুন পরিস্থিতিতে তুরস্ক, লেবানন ও জর্ডানের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ছড়িয়ে পড়া লাখ লাখ সিরীয় নাগরিক দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাচ্ছে।