
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা শহরের প্রধান খালে নির্মাণাধীন স্লুইস গেটের কাজ চলছে চরম ধীরগতিতে। প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষের পথে হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়নি। এতে দেড় বছর ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন উপজেলাবাসী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, ‘গলাচিপা খাল’ নামে পরিচিত শহরের প্রধান খালটি দীর্ঘদিন ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে পড়ায়, পুরোনো স্লুইস গেট সরিয়ে নতুন স্লুইস গেট নির্মাণ এবং দেড় কিলোমিটার খাল খননের পাশাপাশি দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘ন্যাচারাল’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ৩০ জুন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা।
তবে বাস্তবে কাজের অগ্রগতি একেবারেই সন্তোষজনক নয়। থানার সামনে থেকে শহরের প্রধান সড়ক দেড় বছর আগে কেটে ফেলা হলেও এখন পর্যন্ত নতুন স্লুইস গেটের কোনো কাজই দৃশ্যমান হয়নি। বিকল্প সরু সড়কে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ হাওলাদার, দীপঙ্কর মন্ডল এবং অজিত দাস বলেন, "প্রায় দুই বছর হয়ে গেল, সড়ক কেটে রেখেছে, কিন্তু কোনো কাজের হালচাল নেই। বর্ষা মৌসুমে কাদা আর পানি জমে আমাদের চলাফেরাই বন্ধ হয়ে যায়।"
ব্যবসায়ী নারায়ণ সাহা, পলাশ দাস, মনির মিয়া সাহিন সহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "কাজ ফেলে রাখায় ক্রেতা আসা কমে গেছে। ব্যবসায় চরম ক্ষতি হচ্ছে। অনেকেই দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পথে বসতে হবে।"
খালের আশপাশের বাসিন্দারাও বলছেন, অতিরিক্ত ধুলো, কাদায় আশপাশের পরিবেশও মারাত্মক নোংরা হয়ে পড়েছে। শিশু, বৃদ্ধ, নারীসহ সব বয়সের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও প্রকল্পের ধীরগতির বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেয়নি।
দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করে শহরের যান চলাচল এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।