মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাভিদ নেওয়াজ (১৩) ৯৭ দিন পর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে। নাভিদকে সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নাভিদের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার পরপরই তাকে সিএমএইচ থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়। সেই সময় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় পরিবারকে দুইবার মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল।
নাভিদ মোট ২২ দিন আইসিইউতে ছিল, যার মধ্যে ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এরপর ৩৫ দিন হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) এবং পরবর্তীতে ৪০ দিন কেবিনে চিকিৎসা চলছিল। ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, নাভিদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে মোট ৩৬ বার ছোট-বড় অপারেশন করা হয়েছে এবং তার শরীরে ৮ বার চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, যা অন্য কোনো দুর্ঘটনায় আক্রান্ত দগ্ধ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে হয়নি।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, নাভিদ হাসপাতালে আসার পর বারবার বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল, “আমাকে বাঁচান, আমি কি বাঁচব?” দুর্ঘটনায় তার ফুসফুসে পানি জমার কারণে তাকে উপুড় অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল, যা চিকিৎসার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। সেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
এছাড়া, একই দুর্ঘটনায় এখনও পাঁচজন দগ্ধ শিক্ষার্থী ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন, তবে তাদের অবস্থাও ভালো। আশা করা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে তারা বাড়ি ফিরবেন।
নাভিদের বাবা মিজানুর রহমান দীর্ঘ ৯৭ দিন পর ছেলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরায় চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি দেশবাসীর কাছে ছেলেসহ দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২১ জুলাই দুপুর সোয়া ১টার দিকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যা অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে প্রাণহানির দিকে নিয়ে যায়।