কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকায় স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে তিন দিন ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণের এক নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। দাম্পত্য কলহের জেরে এ নির্যাতনের শিকার হন ২০ বছর বয়সী এক নারী। ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরের একটি কক্ষে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে চৌদ্দগ্রাম থানায় স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—নোয়াখালীর সুধারাম থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ, একই গ্রামের বেলাল হোসেন, হৃদয়, মহিন উদ্দিন এবং মুন্সীতালুক গ্রামের আবুল কালাম।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত স্বামীর বিয়ে হয়। তবে স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় তাদের সংসারে বনিবনা ছিল না। একপর্যায়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি নোয়াখালীর সুধারামে চলে যান। চলতি মাসের শুরুর দিকে উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে সমঝোতা হলে স্বামী আবারও স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
এরপর ১৫ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে কৌশলে মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ডে নিয়ে যান তিনি। সেখানে শ্রমিক বেলাল হোসেন তাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করেন।
ভুক্তভোগী জানান, ১৬ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে বেলাল হোসেন ও আবুল কালাম ঘরে এসে স্বামীর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন। কিছু সময় পর আবুল কালাম চলে গেলে স্বামীর সহায়তায় বেলাল হোসেন তাকে ধর্ষণ করেন। পরে তাকে ঘরে আটকে রাখা হয়। ১৮ অক্টোবর রাতে একইভাবে শ্রমিক হৃদয় ও মহিন উদ্দিনও স্বামীর সহায়তায় ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করলে, বাধা দিতে গেলে স্বামী তাকে মারধর করেন এবং কাউকে কিছু না বলতে হুমকি দেন।
ইটভাটার অন্যান্য শ্রমিকরা বিষয়টি জানতে পেরে তার বাবাকে খবর দেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ২৪ অক্টোবর রাতে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদ জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং আরও কেউ এ ঘটনায় জড়িত ছিল কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।