
নারী উদ্যোক্তা ও ইনফ্লুয়েন্সার রোবাইয়াত ফাতিমা তনি আবারও আলোচনায়। চলতি বছরের শুরুতেই তিনি হারিয়েছেন তাঁর স্বামী শাহাদাৎ হোসাইনকে—দীর্ঘ অসুস্থতার পর ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই সন্তানকে নিয়ে একাই নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন তনি। তবে সম্প্রতি হঠাৎ করে তাঁর পুনর্বিবাহের খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ঘিরে তৈরি হয় ব্যাপক সমালোচনা।
স্বামীর মৃত্যুর বছর না ঘুরতেই বিয়ে করায় অনেকেই তাঁকে নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। কেউ কেউ সমালোচনায় মেতে উঠলেও, অনেকে তাঁকে সমর্থনও জানিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন তনি।
তনি লিখেছেন, “আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কৈফিয়ত আগেও দেইনি, এখনো দিবো না। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে আমি যা ভালো মনে করেছি, সেটাই করেছি, ভবিষ্যতেও তাই করবো। সেটা ভুল বা ঠিক—পুরোটাই আমি ভোগ করবো। এতে পাবলিকের কিছু যায় আসে না, কিন্তু আমার জীবনের কিছু হলে সবার ঘুম কেন হারাম হয়, সেটাই বুঝি না।”
নিজের জীবনের এক ‘সিক্রেট’ শেয়ার করে তিনি বলেন, “যারা সারাবছর আমাকে নিয়ে নিজের মনগড়া গল্প বানায়, পোস্ট করে বা ভিডিও তৈরি করে—বিশ্বাস করেন, আমি এসব কোনোদিন দেখি না, শুনি না। উল্টো ব্লক করে দেই। কারণ মানুষ আমাকে খাওয়ায় না, টাকা দেয় না। তাই তাদের কারণে নিজের মনটা কষ্ট পাই না।”
তনি আরও লেখেন, “আপনারা যারা বিভিন্ন পেজে কমেন্ট করেন, জানবেন আমি এগুলো কোনোদিন দেখি না। আপনার সময় ফাঁকা, তাই সময় নষ্ট করেন, আমার সময় নেই।”
বিয়ে নিয়ে সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে আমার বিয়ের কারণে, তারা প্লিজ বেশি বেশি শেয়ার করেন—আমার ফলোয়ার বাড়ে। কিন্তু কিছু পেজ এমনও করছে যে, আমার স্বামীর ফুফুকে তার এক্স-ওয়াইফ বানিয়ে দিয়েছে! এমনকি তাঁর বন্ধুদের বাচ্চাদের সঙ্গে আমার ছবিগুলো দেখে তাদেরও আমাদের সন্তান বানিয়ে ফেলেছে!”
তিনি স্পষ্ট করে জানান, তাদের বিয়ে কোনো গোপন বিষয় নয়—“আমরা নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিয়ের খবর প্রকাশ করেছি। অন্য কেউ ফাঁস করেনি।”
নিজেকে সবসময় “স্পষ্টভাষী” হিসেবে উল্লেখ করে তনি বলেন, “আমি সবসময় ক্লিয়ারকাট কথা বলতে ভালোবাসি। আমার কাছে সম্পর্কের স্বীকৃতি দেওয়া সম্পর্কের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। আমি লোকাচ্ছন্ন জীবন পছন্দ করি না, কারণ আমি কারও ধার ধারি না এবং সত্যি কথা বলতে ভয় পাই না।”
সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি আরও যোগ করেন, “আমার বাচ্চাদের নিয়ে টেনশন করে নিজের ঘুম নষ্ট কইরেন না। তারা আমার বাচ্চা। আর আমাদের নামে যে শত শত ফেক আইডি ও ফেক পেজ চলছে, সেগুলোর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের আসল ও ব্লু ভেরিফায়েড পেজ হলো — Sanvee's by Tony, Forever Tony, এবং Tony Tony।”
তনি তাঁর নতুন স্বামী রাসেলের সঙ্গে সম্পর্কের সময়সূচিও প্রকাশ করেন—“এই বছর ১৪ এপ্রিল আমাদের প্রথম পরিচয়, ২১ জুন প্রথম দেখা, আর ১২ আগস্ট আমাদের বিয়ে হয়।” তিনি মজার ছলে বলেন, “এখন থেকে ডেট ধরে ধরে অ্যানিভার্সারি উইশ করবেন, গিফট চাইলে আমার শোরুমে পাঠিয়ে দিতে পারেন, আমি মাইন্ড করি না।”
শেষে তিনি লেখেন, “আমাকে ভালো না লাগলে দেখবেন না, আনফলো বা ব্লক করে দিন। আর ভালো লাগলে সাপোর্ট করুন, শেয়ার করুন। কারণ আমি বিশ্বাস করি—আল্লাহই সবার ভাগ্য নির্ধারণ করেন, মানুষ তার কর্মের ফল ভোগ করে।”
তনির এই স্ট্যাটাসে একদিকে যেমন আত্মবিশ্বাস ও বাস্তবচেতনার প্রকাশ, অন্যদিকে সমাজের অযাচিত কৌতূহল ও নিন্দার বিরুদ্ধে এক দৃঢ় অবস্থানও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।