
কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও থিয়েটার, কুবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হান্নান রাহিমকে র্যাব-১১ কর্তৃক তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে থিয়েটার, কুবির সদস্যরা। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় ওয়াহিদ জামানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এই মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
থিয়েটার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচার সম্পাদক জাওয়াদ উর রাকিন খান বলেন, ‘তথ্য-প্রমাণ ছাড়া কাউকে তুলে নেওয়ার অধিকার র্যাব বা পুলিশের নেই। এটি ব্যক্তি হান্নান রাহিমের মানহানির শামিল। র্যাব কার ইন্ধনে এ কাজ করেছে, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, কুবি প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির প্রতি আমাদের দাবি—এই ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে, তা পরিষ্কার করা হোক।’
ভুক্তভোগী থিয়েটার, কুবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হান্নান রাহিম বলেন, ‘আমার সঙ্গে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আগে পুলিশ-র্যাব যেভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় মানুষকে তুলে নিয়ে যেত, এখনো যদি সেই চিত্র দেখতে হয়, তবে তা কখনোই কাম্য নয়। যেভাবে আমাকে সাদা পোশাকে তুলে নিতে এসেছিল, প্রথমে মনে হয়েছিল, এরা হয়তো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ বা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী। তাদের আচরণও ছিল সেই রকম। মনে হচ্ছিল, কোনো প্রশ্ন তুললে বা কথা বললে তারা সরাসরি গুলি চালাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, বানোয়াট তথ্যের ভিত্তিতে নয়। আমি দীর্ঘদিন ধরে কুবিতে কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। হয়তো সেই কারণেই আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে অনেক কিছুর সংস্কারের প্রয়োজন, পুলিশেরও। কাউকে আটক করতে হলে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতেই করা উচিত।’
মানববন্ধনে থিয়েটার, কুবির সভাপতি গুলশান পারভিন সুইটি বলেন, ‘হান্নান রাহিমকে সবাই একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ হিসেবে চেনেন। যাকে কখনো শহীদ মিনারে, কখনো মুক্তমঞ্চে নাটক করতে দেখা যায়। এমন একজন মানুষকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্য হিসেবে তুলে নেওয়া কতটা গ্রহণযোগ্য, তা ভেবে দেখার বিষয়। আমি ক্যাম্পাসে তার সঙ্গে শুরু থেকেই ছিলাম। তাই বলতে পারি, হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। র্যাব-১১ তাকে কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই তুলে নিয়েছে, যা কতটা যৌক্তিক, তা প্রশাসনের বিবেচনার বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, এর পেছনে কারা রয়েছে এবং কেনই বা এমন অভিযোগ আনা হলো। আমরা চাই, যদি কেউ সত্যিকারের দেশদ্রোহী হয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু কোনো নিরাপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া এমন পদক্ষেপ গ্রহণ অনুচিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও থিয়েটার, কুবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হান্নান রাহিমকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে র্যাব-১১ কর্তৃক তুলে নেওয়া হয়। তবে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় ঐদিন রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।