Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / জিয়ার পরিকল্পনায় জঙ্গি ছিনতাই মিশন - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

জিয়ার পরিকল্পনায় জঙ্গি ছিনতাই মিশন

November 21, 2022 10:26:06 PM   স্টাফ রিপোর্টার
জিয়ার পরিকল্পনায় জঙ্গি  ছিনতাই মিশন

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) কোর্টের মূল ফটকের সামনে থেকে আনসার আল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সংগঠনটির ১৭-১৮ জন সদস্য অংশ নেয়। ছিনিয়ে নেওয়ার মিশনে অংশ নেওয়া জঙ্গিদের মধ্যে ৫-৬ জন জঙ্গি মোটরসাইকেল করে আসে। আর বাকি ১০-১২ জঙ্গি আদালতে আশপাশে অবস্থান নেয়। সম্পূর্ণ মিশনটি আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়ার (৪০) দিক নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় ঘটে।

রোববার (২০ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনায় এজাহারনামীয় ২০ জনকে ও ২১ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রসিকিউশনের পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি এসব তথ্য জানান।

মামলার এজাহারে পরিদর্শক জুলহাস অভিযোগ করে বলেন, আজ সিএমএম কোর্ট ভবনের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে ২০১৬ সালে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানায় হওয়া সন্ত্রাস বিরোধী আইনের একটি মামলায় জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ১৪ আসামির হাজিরের দিন ধার্য ছিল। এই ১৪ জঙ্গিরা হলেন—শাহিন আলম ওরফে কামাল (২২), শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন (২৬), বিএম মজিবুর রহমান (২৭), মো. সুমন হোসেন পাটোয়ারী ওরফে সাকিব ওরফে সিহাব ওরফে সাইফুল (২০), মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান (২৪), খায়রুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে রিফাত ওরফে ফাহিম ওরফে জিসান (২৪), মো আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪), মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমন (২৫), মো.আরাফত রহমান (২৪), মো. শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), মো. আ. সবুর ওরফে রাজু ওরফে সাদ ওরফে সুজন (২১), মো. রশিদুন্নবী ভূইঁয়া (২৬), মো. ঈদী আমিন (২৭) ও মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪)। এদের মধ্যে মো. ঈদী আমিন ও মেহেদী হাসান অমি জামিনে রয়েছেন।

গতকাল সকাল আনুমানিক ৮টা ৫ মিনিটে কাশিমপুর কারাগার থেকে যথাক্রমে ১-১২ জন আসামিকে প্রিজন ভ্যানে করে সিএমএম কোর্টের হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ডিএমপির ঢাকার প্রসিকিউশন বিভাগের পুলিশ সদস্যরা ১২ আসামিকে হাজিরার জন্য সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যান। মামলার শুনানি শেষে জামিনে থাকা আসামি ঈদী আমিন ও মেহেদী হাসন অমিকে আদালত থেকে বের হয়ে যান। এই সন্ত্রাসী কাজে পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে এক জঙ্গি লোহারজাতীয় কিছু একটা দিয়ে পুলিশ সদস্য মো. আজাদকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করে। কিন্তু আজাদ পেছনে সরে যাওয়ায় তার মুখে ও নাকে আঘাত লাগে। এতে তার মুখ ও নাক গুরুতরভাবে জখম হয়। পরে পুলিশ সদস্য আজাদের চিৎকারে আশেপাশে থাকা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা মূল ফটকের দিকে আসলে জঙ্গিরা তাদের লক্ষ্য করে পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করে। এতে ফটকের নিরাপত্তারক্ষী মো. তারেক জিয়া (২১) মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। 

এই সুযোগে অজ্ঞাত জঙ্গিরা আনসার আল ইসলামের সদস্য মইনুল হাসান শামিম ও মো. আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেল করে পালিয়ে যায়। এ সময় অপর দুই জঙ্গি মো. আরাফত রহমান ও মো. আ. সবুর আহত পুলিশ সদস্যদের কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের আটক করা হয়। এছাড়া শামিম ও সিদ্দিক মোটরসাইকেল করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে পুলিশ ধাওয়া করে। এসময় তারা মোটরসাইকেলটি রেখে পালিয়ে যান। পরে সেই মোটরসাইকেলটিকে জব্দ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলের পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, পুলিশের ওপর আক্রমণ করে দুইজন জঙ্গিকে অন্য জঙ্গিরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আমরা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের ও যারা গ্রেপ্তার আছে তাদেরকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়সহ যেসব ত্রুটি ছিল তা বের করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া দুই জঙ্গিকে কারা ছিনিয়ে নিতে এসেছিল তাদের সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করছি যারা জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিয়ে গেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।