
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে তিন কোটি সতেরো লক্ষ টাকার বাজেটের কাজে সিমেন্ট ছাড়াই ঢালাই দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। উপজেলার জাঙ্গিরাই দাখিল মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকির কাজে রাতের আঁধারে সিমেন্ট ছাড়া ঢালাই দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে কাজের ব্যাপক অনিয়ম দেখে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। পরে ঠিকাদারকে খবর দিলে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ঢালাই ভেঙে ফেলা হয়।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, চারতলা ভবনের দেয়াল এবং ফ্লোরে নিম্নমানের ইট ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। এসব গুরুতর অনিয়মের পরে এবার সিমেন্ট ছাড়া খোয়ার সাথে বালি দিয়েই সেফটি ট্যাংকির ফ্লোর ঢালাই করার অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় জনতা। এসময় ওই ভবন নির্মাণকাজের ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসলে এলাকাবাসী তাঁকে অবরুদ্ধ রাখে। পরে ঠিকাদার ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ঢালাই দেওয়া অংশ ভেঙে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর মৌলভীবাজার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ৩ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জাঙ্গিরাই দাখিল মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, এমপি। ২০২০/২০২১ অর্থবছরের কাজটি পায় মেসার্স সাইফুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর পর থেকে নিম্নমানের রড, বালু সিমেন্ট এবং খোয়া দিয়েই ভবন নির্মাণ কাজ করার অভিযোগ রয়েছে এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
জাঙ্গিরাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মালু মিয়া বলেন, কাজ শুরুর প্রথম থেকেই ঠিকাদার অনিয়ম করে আসছে। মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকির ঢালাইয়ের কাজ দিনের বেলা করার কথা থাকলেও রাতের আঁধারে সিমেন্ট ছাড়াই ঢালাই দিয়েছে। অনিয়ম পেয়ে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাঙ্গিরাই দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সফিকুল ইসলাম বলেন, কাজের অনিয়ম পেয়ে আমরা স্থানীয়দের সহায়তায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পরে ঠিকাদার ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে সিমেন্ট ছাড়া ঢালাই দেওয়া সেফটি ট্যাংকিটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্মাণকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা মৌলভীবাজার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, এ মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকির ঢালাইয়ের কাজ আমাদেরকে না জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিমেন্ট ছাড়া ঢালাই দেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কাজটি করতে গিয়ে আমাদের অনেক লস হয়েছে। শ্রমিকরা আমাকে না জানিয়েই সিমেন্ট ছাড়া সেফটির ট্যাংকির ঢালাই দিয়েছে। পরে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে আমরা এটি ভেঙে ফেলেছি। এ কাজটি নতুন করে সিডিউল অনুযায়ী করা হবে।