জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ডিসেম্বরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হবে, জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। তিনি জানান, এবারের ভর্তি পরীক্ষা পূর্বের শিক্ষাবর্ষের মতোই অধিভুক্ত সকল কলেজের স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে বহুনির্বাচনি (MCQ) পদ্ধতিতে হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ইতিহাস অনুযায়ী কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি হত সরাসরি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে। তবে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হয় শুধু এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএর ভিত্তিতে। দীর্ঘ বিরতির পর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পুনরায় পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়। চলতি শিক্ষাবর্ষেও একই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে।
পরীক্ষার ধরণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে এমসিকিউ পদ্ধতিতে, যেখানে মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্র থাকবে এবং সময় সীমা এক ঘণ্টা। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবেন শিক্ষার্থী, আর ভুল উত্তরের জন্য কোনো নম্বর কাটা হবে না। বিজ্ঞান শাখা, মানবিক/গার্হস্থ্য অর্থনীতি এবং ব্যবসায়ে শিক্ষা শাখায় পরীক্ষার কাঠামো একই রকম। বাংলায় ২০, ইংরেজিতে ২০, সাধারণ জ্ঞানে ২০ এবং প্রতিটি শাখার উচ্চমাধ্যমিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন থাকবে ৪০ নম্বরের। পাস নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫।
ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীর মেধাতালিকা নির্ধারণের জন্য মোট নম্বর গণনা হবে ২০০ নম্বরে। এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএয়ের ৪০ শতাংশ এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএয়ের ৬০ শতাংশ যুক্ত হবে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর ভর্তি যোগ্যতা নির্ধারণ করা হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে ৮৮১টি কলেজে স্নাতক সম্মান কোর্স চালু রয়েছে, যার মধ্যে ২৬৪টি সরকারি এবং ৬১৭টি বেসরকারি কলেজ। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে মোট আসন সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি। ডিগ্রি (পাস) কোর্সে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আসন সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি। ভিন্ন ভিন্ন কোটার জন্য সর্বোচ্চ ৮টি আসন সংরক্ষিত থাকবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩টি, আদিবাসী কোটায় ১টি, প্রতিবন্ধী কোটায় ১টি এবং পোষ্য কোটায় ৩টি আসন থাকবে।
সারসংক্ষেপে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ বিরতির পর পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা চালু করছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের জিপিএ ও ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয় করে মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং কলেজগুলোতে নির্ধারিত আসনের মধ্যে কোটাভিত্তিক সুবিধা প্রদান করা হবে।