
টাঙ্গাইলে হেযবুত তওহীদের নারী বিভাগের উদ্যোগে নারীদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৯ জুলাই সকাল ১১টায় টাঙ্গাইল পৌর হলরুমে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক ও হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী। টাঙ্গাইল জেলা মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোমেনা আক্তার মারিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ বিভাগের আমির মো. এনামুল হক বাপ্পা, টাঙ্গাইল জেলা সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাবিব।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, নারীর প্রতিভা আছে, মেধা আছে, সমাজে অবদান রাখার যোগ্যতা আছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সাহস আছে; কিন্তু আজকের সমাজে তার সেই গুণগুলোর কোনো মূল্যায়ন নেই, কোনো স্বীকৃতি নেই। সে তার মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ পাচ্ছে না। তাকে ধর্মের নাম করে, তার উপর সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপ করে অবদমিত করে রাখা হচ্ছে। সে এই অন্যায় অবস্থা, এই জাহেলিয়াতের কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছে না, কোনো উদ্ধাকারীর সন্ধানও তার জানা নেই। এজন্য নারীরা আজ নীরবে কাঁদে।
তিনি আরো বলেন, চৌদ্দশ বছর আগের আরবে নারীর এই একই অবস্থা ছিল। সেই কান্না থেকে তাদেরকে মুক্তি দিয়েছিলেন আল্লাহর রসুল। নারীরা কান্নাকাটি রেখে বীরাঙ্গনা হয়েছিলেন। যে হাতে নারী রুটি বানাতো, সেই হাতকে রসুলাল্লাহ এত বলিষ্ঠ করে তুললেন যে তারাই বল্লম আর তলোয়ার চালিয়ে শত্রুর মনে ত্রাস সৃষ্টি করে ফেলেছে। রসুল তাদের মুখে ভাষা দিলেন, তাদের প্রাপ্য মর্যাদা দিলেন, শক্তি দিলেন। তারা তাদের মেধা যোগ্যতার প্রমাণ রাখল। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অবদান রাখল। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায়, উপার্জনে, বাজার ব্যবস্থাপনায়, যুদ্ধে, মসজিদে এক কথায় জাতীয় জীবনের সর্ব অঙ্গনে তাদের অবাধ বিচরণ রসুল নিশ্চিত করলেন।
রুফায়দাহ পন্নী বলেন, অলিখিত সিস্টেম, আচার-বিচার-কুসংস্কার ও প্রথাগুলো নারীদের অগ্রগতির জন্য বিরাট বাধা। যেমন আজ যদি গ্রামের কোনো নারীকে চিকিৎসক প্রতিদিন সকালে দৌড়ানোর পরামর্শ দেন তাহলে সে সমাজের বিকৃত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তা করতে পারবে না, সুস্থও হতে পারবে না। কিন্তু আল্লাহ-রসুলের ইসলাম তো তাকে এক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয় নি। তাদেরকে এই ফতোয়ার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করার জন্য প্রকৃত ইসলামের শিক্ষাগুলো তাদের সামনে তুলে ধরা এখন জরুরি। কেবল শহরের সুবিধাপ্রাপ্ত নারীদেরকেই নয়, প্রত্যন্ত গ্রামের অশিক্ষিত অর্ধ-শিক্ষিত গৃহবধুকেও সামাজিক ও জাতীয় অঙ্গনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় নারী সম্পাদক আফরোজা মনির, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা ইয়াসমিন সেতু, কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা নাছিমা আক্তার, জামালপুর জেলার নারী সম্পাদক ফরিদা পারভীন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নারী সম্পাদক তাহমিনা আক্তার প্রমুখ।