Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / জাতীয় / নারী কর্মীদের উপর হামলাকারীরা কাপুরুষ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

নারী কর্মীদের উপর হামলাকারীরা কাপুরুষ

June 21, 2024 10:42:14 AM   স্টাফ রিপোর্টার
নারী কর্মীদের উপর হামলাকারীরা কাপুরুষ

রুফায়দাহ পন্নী
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, হেযবুত তওহীদ একটি অরাজনৈতিক, মানবতার কল্যাণকামী, সত্যনিষ্ঠ আন্দোলন। আল্লাহ রসুলের (সা.) প্রকৃত ইসলামের রূপরেখা মানুষের সামনে তুলে ধরতে প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ‘দৈনিক দেশেরপত্র’ প্রকাশ করা হয়। কারণ এসময় অন্যান্য পত্রিকা বন্ধ থাকে এবং অফিস-আদালত বন্ধ থাকে বলে মানুষ পত্রিকা পড়ার সুযোগ পায়। পত্রিকায় দেশ-বিদেশের চাঞ্চল্যকর খবরের পাশাপাশি হেযবুত তওহীদের নীতি-আদর্শ, উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মব্যবসা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আদর্শিক বক্তব্য তুলে ধরা হয়। আরো তুলে ধরা হয় ইসলামের মৌলিক বিষয়, গৌরবময় ইতিহাস, বর্তমান মুসলমান জাতির সংকট ও সমাধানের উপায়। এই লেখাগুলো সাধারণ মানুষ পড়ে যেন সঠিক দিশা পায়, ইসলাম সম্পর্কে ধারণা লাভ করে এবং গৌরবময় ইতিহাস জেনে বর্তমান সংকট নিয়ে সচেতন থাকতে পারে সে উদ্দেশ্যেই দেওয়া হয়। তাই ঈমানী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যরা ঈদের দিনেও এই পত্রিকা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। 
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা, নিজস্ব মতামত বা ধর্মপ্রচার করা আমাদের রাষ্ট্রপ্রদত্ত মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার। দেশের যেকোনো নাগরিক রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধ যে কোনো কাজ করতে পারে। তাকে বাধা প্রদানের কোনো অধিকার কারো নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে নিয়ম-নীতি মেনেই আমাদের পত্রিকা প্রকাশ করা হয় এবং হেযবুত তওহীদও একটি আইনমান্যকারী আন্দোলন যা বিগত ২৯ বছরে দেশের একটি আইনও ভঙ্গ করেনি। অথচ একটি মহল দ্বারা আমরা প্রতিনিয়ত বে-আইনীভাবে হামলার শিকার হচ্ছি। অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও আমাদের বেশকিছু বিক্রয়কর্মীদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। তারা রাস্তাঘাটে আমাদের বিক্রয়কর্মীদের হাত থেকে পত্রিকা ছিনিয়ে নিয়েছে, সেগুলো ছিঁড়ে ফেলেছে, রাস্তাঘাটে প্রকাশ্যে তাদেরকে হেনস্তা করেছে, লাঞ্ছিত করেছে। 
ঈদের পরদিন নরসিংদীতে আমাদের দুইজন বোন পত্রিকা নিয়ে বের হলে তাদেরকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে এবং কিল ঘুষি লাথি মেরে তাদেরকে আহত ও রক্তাক্ত করেছে। তারা এখন হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। একইদিনে রাজশাহীর চারঘাটে আমাদের তিনজন সদস্যের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার চালানো হয়। একই পরিবারের চার সদস্য মোটর সাইকেলে করে লাঠিসোটা নিয়ে পেছন থেকে আক্রমণ করে এবং দ্রুত সটকে পড়ে। আহত সদস্যরা হাসপাতালে ভর্তি আছে। একইদিনে সাভারেও তারা আমাদের নারী কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে তিনজন নারী কর্মীদের মুখে ঘুষি মারে এবং পত্রিকা কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেয়। তারপর সন্ত্রাসীরা তাদের জামা-কাপড় ধরেও টানা-হেঁচড়া করে। এভাবে নোয়াখালী, ফেনী, গাজিপুর, লাকসামসহ অন্তত দশটা জায়গায় আমাদের কর্মীদের উপরে তারা হামলা চালিয়েছে ও পত্রিকা ছিনিয়ে নিয়েছে। আসুন দেখি এই হামলাগুলো কারা চালাচ্ছে। আমরা খবর নিয়ে জেনেছি যে এদের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ রয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেমন: জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন (চরমোনাই)-সহ এ ধরনের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী তারা। 
আমাদের দেশে যারা ধর্মকে ব্যবহার করে অপরাজনীতি, ধর্মব্যবসা করে, উগ্রবাদী-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ঘটিয়ে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করতে চায় তারা সবসময় ফেতনা সৃষ্টির সুযোগের সন্ধানে থাকে। এই গোষ্ঠীটি বিভিন্ন বাজারে, এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকে। তারা কিছু কিছু মাদ্রাসাতেও শিক্ষকতা করে, মসজিদে ইমামতিও করে। বিভিন্ন সময় তাদের স্বার্থসিদ্ধিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করেও তারা হামলা চালায়। সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ কখনোই আমাদের বিক্রয় কর্মীদের হেনস্তা করে না বরং সহযোগিতা করে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পত্রিকা যাচ্ছে। মানুষ সেসব পত্রিকা আগ্রহ করে পড়ছেন, অভিবাদন জানাচ্ছেন। আমাদের বিক্রয় কর্মীদেরকে সাধুবাদ দিচ্ছেন।
কিন্তু এই গোষ্ঠীটি পাড়া-মহল্লায়, দোকানে ওঁৎ পেতে বসে থাকে। তাদের চোখের সামনে যখন আমাদের বিক্রয়কর্মীরা আসে তখন তারা তাদের উপর হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের খবর দিয়ে এনে আমাদের নারী কর্মীদের উপরে হামলা চালায়। গত বছর ঈদেও তারা আমাদের অন্তত দশটা জায়গায় হামলা চালিয়েছে। সেসবের প্রতিবাদে আমরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল করেছি। ঢাকা আইডিবি ভবনে প্রতিবাদ সমাবেশও করেছি। হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করেছি। 
হামলাকারীদের উদ্দেশে আমরা বলতে চাই, যারা এভাবে নিরপরাধ, পত্রিকা বিক্রয়কারী নারীদের উপর আক্রমণ করে, তাদেরকে আঘাত করে তারা পুরুষ নয়, তারা কাপুরুষ। তারা নিকৃষ্ট, ছোট মানসিকতার মানুষ। তাদের এই অপকর্ম একটি ফেতনা। হেযবুত তওহীদ কখনো এ ধরনের ফেতনা করবে না। কারণ আমরা জানি, আল্লাহ মো’মেনদেরকে বলেছেন যুদ্ধ করতে। মো’মেনরা যুদ্ধ করে। যুদ্ধের একটা নীতি আছে, ধর্ম আছে, শৃঙ্খলা আছে। যুদ্ধে প্রতিপক্ষ সুস্পষ্ট। কিন্তু এরা কাপুরুষ। এরা নিরস্ত্র, নিরপরাধ বিক্রয় কর্মীদের হাতের কাছে পেয়ে হায়নার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে। 
আমরা তাদের স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, তাদের এসব চোরাই হামলা, আক্রমণ, উস্কানি, গুজব সৃষ্টির সুযোগ বেশিদিন থাকবে না। তাদের এসব ষড়যন্ত্র বুমেরাং হবে, তারা পরাজিত হবে। হেযবুত তওহীদ এমন একটি মহান আন্দোলন যার সদস্যরা দিনরাত আল্লাহর কাছে শহীদ হওয়ার জন্য প্রার্থনা করে। আমরা আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য মাঠে নেমেছি। আমরা জানি, আল্লাহর রসুল (সা.) এর সময় সাহাবীরা যখন সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য মাঠে নামে তখনও নারী আসহাবরা হামলার শিকার হয়েছে। এজন্যই আমরা দেখি, ইসলামের প্রথম শহীদ একজন নারী, সুমাইয়া (রা.)। উহুদ যুদ্ধের সময় মুসলমান বাহিনী সংকটে পড়লে আল্লাহর রসুল (সা.) কে হেফাজত করতেও ছুটে আসেন একজন নারী, নাম উম্মে আম্মারা (রা.)। কাজেই রসুলাল্লাহ (সা.) এর সময় থেকেই নারীরা আল্লাহর ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে, দীনকে হেফাজত করেছে। 
হেযবুত তওহীদ আজকে সেই জায়গায়। আমাদের দেশেও যখন নারীদের মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে বাক্সবন্দি করে রাখা হয়েছে তখন হেযবুত তওহীদ নারীদেরকে প্রকৃত ইসলামের আদর্শ দ্বারা উদ্দীপ্ত করেছে। হেযবুত তওহীদের সামনে তাদের আদর্শিক পরাজয়ের দরুণ এই ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা কন্টেন্ট বানাচ্ছে। কিন্তু তাতে তাদের কোন লাভ হচ্ছে না। তাদের হুমকি, ধামকিতে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ঈমান আরো শাণিত হচ্ছে। হাজার হাজার সদস্য আমাদের সাথে যোগদান করছে। কোন কিছুতেই হেযবুত তওহীদের পথ রুদ্ধ করতে না পেরে তাই তারা ভিন্ন রাস্তা অবলম্বন করছে। নিজ এলাকায় হেযবুত তওহীদের সদস্যাদের পেলে তাদেরকে দুর্বল ভেবে নারীদের উপর বীরত্ব জাহির করছে। এটা যে বীরত্ব নয়, কাপুরুষতা তা বোঝার মত ঘিলু তাদের নেই। তাদের এসব ফেতনায় খুব বেশি হলে আমাদের কিছু সদস্যার রক্ত ঝরতে পারে, প্রাণ যেতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কোনো লাভ হবে না। তারাই পরাজিত হবে। দেশে আইন আছে, আদালত আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনির মাধ্যমে অপরাধীদের পাকড়াও করা হবে। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি স্থানে আক্রমণকারীদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অনেকে ক্ষমা চাচ্ছে, কেউ মুচলেকা দিচ্ছে, কেউ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। 
আমি সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে বলতে চাই যেখানে আমাদের বিক্রয়কর্মীরা যাবেন আপনারা তাদের বক্তব্য শুনবেন। একটি পত্রিকা অন্তত পড়ে দেখবেন সেখানে কী বলা হয়েছে। আমাদের পত্রিকার প্রতিটি লাইন ইসলামের জন্য, মানবতার কল্যাণে দেশের মানুষের জন্য। তাই যারা আমাদের সদস্যদের উপর আক্রমণ করতে চায় তাদের প্রতিহত করুন। তাদেরকে আইনের কাছে সোপর্দ করুন। আপনাদের ভিতর থেকে যদি প্রতিরোধ গড়ে উঠে তাহলে এ ধরনের উগ্রবাদী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর জায়গা বাংলাদেশের মাটিতে হবে না ইনশাল্লাহ।