
জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী:
২২ বছরেও বিচার হয়নি নরসিংদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মো. মানিক মিয়ার হত্যাকাণ্ডের। এ হত্যার বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে উপজেলার মোড় থেকে শুরু করে জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
২০০১ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন নরসিংদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার মো. মানিক মিয়াকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই হত্যারকাণ্ডের আসামিদের দ্রুত বিচার এবং ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মানিকের ছোট ভাই আমিরুল ইসলাম আমু।
মানববন্ধনে আমিরুল বলেন, ‘২০০১ সালের ১ জানুয়ারি আমার বড় ভাই তৎকালীন নরসিংদী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার মো. মানিক মিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ বিষয়ে নরসিংদী থানায় তিনজন আসামির নাম উল্লেখ করে একটি মামলাও করা হয়। ওই মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় সাবেক প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন, ২ নম্বর আসামি বর্তমান নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক নরসিংদী পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল এবং ৩ নম্বর আসামি করা হয় মাদক সম্রাজ্ঞী পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান মতি সুমনকে। মামলাটি বর্তমানে ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচারাধীন অবস্থায় নরসিংদী হস্তান্তর করেন ট্রাইবুনাল ১ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ঘটনার ২১ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত আসামিদের বিচার হয়নি। যখন কমিশনার মানিককে হত্যা করা হয়, তখন কামরুল ও তার বড় ভাই নিহত মেয়র লোকমান নরসিংদী শহরের গডফাদার হিসেবে খ্যাত ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাইকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যার পর আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর চার্জশিট আদালতে বিচারের জন্য পাঠায়। পরে সি,আইডি আরও দুই দফা তদন্ত করে চার্জশিট দেন।’
আমিরুল আরও বলেন, ‘সাক্ষীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সাবেক পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল বাহিনীর হুমকি মুখে প্রাণের ভয়ে সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষী দিতে পারছে না। সাক্ষী দেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হলে কামরুলের সন্ত্রাসী বাহিনী আদালত চত্বর ঘিরে রেখে সাক্ষীদের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। শুধু তাই নয় কামরুলের সন্ত্রাসী বাহিনী সাক্ষীদের বাড়িতে গিয়েও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ফলে সাক্ষীরা এখন নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে পারছে না।’
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, ‘মানিক হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর অতিক্রম হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। আমরা চাই এ ঘটনার দ্রুত বিচার হোক, আসামিদের ফাঁসি হোক। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, কমিশনার মানিকের ভাই মো. হিরন মিয়া, মো. শাহজাহান, মো. বেদন ভূঁইয়া, মো. জাকারিয়া, মো. ইয়ার আলামীনসহ পাঁচ শতাধিক এলাকাবাসী।
এদিকে সাবেক মেয়র ও বর্তমান শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুলের সমর্থিত প্রায় ৫০/৬০ জনের মত নেতাকর্মী কামরুজজামান কামরুলের গাড়ির আগে ও পিছনে দেখা যায়। তাদের দুই গ্রুপ নরসিংদী জজকোর্টের এর রাস্তায় মুখোমুখি অবস্থানে ভাগ বিতন্ডায় লিপ্ত হন পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করায় অপ্রীতিকর ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় দুই গ্রুপ। তবে এ পরিস্থিতিতে অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন বলে জানান একজন আইনজীবী।