
পূরণ হতে চলেছে বাংলার সোনার মেয়েদের আক্ষেপ। ফুটবল পাগল বাঙালিকে স্বপ্নপূরণের স্বাদ দিয়েছে অদম্য কিশোরীরা। এবার এই মেয়েদের স্বপ্নপূরণ করতে চলেছে গোটা দেশ। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে চড়েই সাফের ট্রফি নিয়ে দেশবাদীর উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হতে হতে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা করবে সানজিদারা।
বাংলার দামাল মেয়েরা নতুন করে লিখেছেন সাফের ইতিহাস। দেশকে উপহার দিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। দেশকে দিয়ে যাওয়া কথা রেখেছে ওরা। ফুটবল পাগল বাঙালির স্বপ্নপূরণ করেছে নিজেদের অদম্য সাহস দিয়ে। দেশের স্বপ্নপূরণের আগে বেশ আক্ষেপ করেই বাংলাদেশের মিডফিল্ড তারকা সানজিদা বলেছিলেন, 'ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। '
সানজিদার ওই এক লাইনেই ঝড় উঠেছে দেশের মানুষের হৃদয়ে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আপামর জনসাধারণও এই মেয়েদের জন্য ছাদখোলা বাসের দাবি জানিয়েছিলো।
সানজিদার ওই ফেসবুক পোস্ট চোখে পড়েছিলো যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের। পরে মন্ত্রণালয় আর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) যৌথ প্রচেষ্টায় একদিনের ভেতরেই সানজিদাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাস। বিআরটিসি কম্লাপুর বাস ডিপোতে একটি ডাবল ডেকার বাসের ছাদের অংশ কেটে ফেলে, সেই বাসটিকেই চ্যাম্পিয়নদের ছবিতে মুড়িয়ে তৈরি হয়েছে সানজিদাদের স্বপ্নের চ্যাম্পিয়ন বাস।
বাস প্রস্তুত, অপেক্ষা বাংলার সোনার মেয়েদের দেশ ফেরার। সে অপেক্ষাও শেষ হতে চলেছে আত্র কিছুক্ষণ পরই। আজ দুপুর ১ টা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের। বিমানবন্দর থেকে সেই বাসেই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে মতিঝিলের বাফুফে কার্যালয়ে পৌছাবে সানজিদারা।
চ্যাম্পিয়ন যাত্রার আগে বিমানবন্দরে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তার সঙ্গে থাকবেন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তারা। মিষ্টি আর ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়েই বরণ করে নেওয়া হবে দেশকে ট্রফি উপহার দেওয়া এসব অদম্য কিশোরীদের।
এরপরও শুরু হবে সানজিদাদের চ্যাম্পিয়ন যাত্রা। ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবেন সাবিনা-সানজিদারা। চ্যাম্পিয়ন যাত্রা শেষে মতিঝিলে বাফুফে কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে এই সোনার মেয়েদের অভ্যর্থনা জানাবেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
এদিকে ইতিহাস গড়া মেয়েদের জন্য বিমানবন্দরে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীর হযরত শাহজালাল (র) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে অবতরণ করবে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়া মেয়েরা। সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে বিমানবন্দর থেকে বাইরে বের হতে লেগে যাছে আরও কিছুক্ষণ সময়।
বিমানবন্দর থেকে বাইরে বের হওয়ার পর তাদের জন্য রাখা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের বাইরে ও আশপাশের জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। বুধবার সকাল থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন তারা।
বিমানবন্দরে সংবর্ধনা পর্ব শেষ করে ছাদখোলা বাসে মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনের উদ্দেশে রওনা করবেন ফুটবলাররা। তাদের আগে পিছে থাকবে মিডিয়া, নিরাপত্তা বাহিনী আরও কতো উৎসুক মানুষ। বাসের ছাদে দাঁড়িয়ে তারা দেখতে পাবেন রাস্তার দুই পাশের হাজার হাজার মানুষ করতালি দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে চ্যাম্পিয়নদের।
এদিকে, এরই মধ্যে চ্যাম্পিয়ন দলকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা। সংবাদমাধ্যমের সরব উপস্থিতি ছাড়াও বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে দেখা যাচ্ছে উল্লসিত জনতার জমায়েত। যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে।