
রায়হানুল ইসলাম, বগুড়া:
ভারতীয় উপমহাদেশের বিরল প্রজাতির একটি পারুল গাছ, যা সাত ভাই চম্পার কাহিনিতে উল্লেখিত পারুল বোনের সঙ্গে তুলনা করা হয়, বর্তমানে প্রায় শতবর্ষের কাছাকাছি পৌঁছেছে। গাছটি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সরকারি নাজির আখতার কলেজ চত্বরে অবস্থিত।
গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Stereospermum cheloniodes (পূর্বে Stereospermum suaveolens) এবং ইংরেজি নাম Trumpet Tree। এর আদি নাম পাটল, যা পরিবর্তিত হয়ে পারুল হয়েছে। এ গাছ বিরল প্রজাতির Bignoniaceae পরিবারভুক্ত এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে এটি বাংলাদেশে একমাত্র পরিচিত পারুল বৃক্ষ।
প্রায় ৪০-৫০ ফুট উঁচু গাছটির পৃষ্ঠদেশ ধূসর-কালচে, পাতার রং গাঢ় সবুজ। পাতা শীতকালে ঝরে যায় এবং এপ্রিল-মে মাসে গাছটি ফুলে সুশোভিত হয়। ফিকে সাদার সঙ্গে মিশ্রিত সাদা রঙের ফুলগুলোর দৈর্ঘ্য প্রায় এক ইঞ্চি এবং এগুলো শুকালে মৃদু সুগন্ধ ছড়ায়। গাছে ১০ ইঞ্চি লম্বা চিকন বাঁকানো ফল হয়, যা পরিণত হয়ে ঝরে পড়ে।
সরকারি নাজির আখতার কলেজের জমিদাতা মরহুম সৈয়দ হুর্দা ১৯৪৪ সালে অবিভক্ত ভারতবর্ষের মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর থেকে এ গাছের দুটি চারা এনে রোপণ করেন। বর্তমানে একটি গাছ কলেজ চত্বরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আলী আশরাফ জানান, গাছটি রক্ষায় বন বিভাগ এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় একটি নার্সারি বিরল এ গাছের চারা উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে।
পারুল গাছটি শুধু এর সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং এটি একটি ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ও গবেষকরা।