
বরিশাল সদর প্রতিনিধি:
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাসভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ছাত্র-জনতা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনের সামনে বুলডোজার নিয়ে উপস্থিত হয় তারা। রাত সোয়া ১টার দিকে ভবনটি ভাঙতে শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে সেনাবাহিনী ভবনের গেটে ব্যারিকেড তৈরি করে জনতাকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করলেও ছাত্র-জনতা ব্যারিকেডটি ভেঙে ভবনের কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়ে। এ সময় সমবেত জনতা আওয়ামী বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান জানান, সেরনিয়াবাত ভবনটি সাদিক আব্দুল্লাহর টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হত। তিনি বলেন, এটি ফ্যাসিবাদের আস্থানা, আর বাংলাদেশে এমন কোনো জায়গা আমরা রাখতে চাই না।
অন্য এক জনতা ইয়াকুব মিয়া বলেন, সাদিক আব্দুল্লাহর বাড়িটি শোষণের প্রতীক। আমরা এটিকে আর থাকতে দিতে চাই না। তাই আমরা এই বাড়িটি গুঁড়িয়ে দিতে এসেছি। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা তা অতিক্রম করে ভবনে প্রবেশ করেছে।
এদিকে, গণ-অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা বুধবার রাত ৯টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাষণ দেন। তার ওই ভাষণের প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের মতো বরিশালের সেরনিয়াবাত ভবনেও বুলডোজার আনা হয়।
বরিশালের কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পরিষদের মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর বোন জামাতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়ি। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নিহত হন। তারপর থেকে ওই বাড়িতে তার ছেলে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও পরে সাদিক আব্দুল্লাহ বাস করতেন। গত ৫ আগস্ট সাদিক আব্দুল্লাহ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। ওই দিনই উত্তেজিত জনতা বাড়িটিতে আগুন দিলে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়রসহ তিনজন নিহত হন।
এদিকে, কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবন ভাঙচুরের পর রাত দেড়টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নগরীর বগুড়া রোডস্থ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বরিশালের বাসভবনেও ভাঙচুর চালায়। সেখানে একটি টিনের ঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি টিনের ঘর লাগোয়া একতলা ভবনের সামনের অংশ এবং পাশের দোতলা ভবনের সামনের অংশ ভাঙা হয়। পরে উঠানের সীমানা প্রাচীর ও বাড়ির সামনের সীমানা প্রাচীর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বুলডোজার দিয়ে।