
শেরপুর সংবাদদাতা:
শেরপুরের শ্রীবরদীতে বোরকা পরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীসহ চারজনকে হত্যা করেছে মিন্টু মিয়া (৩৫) নামে এক যুবক। মিন্টু পুটল গ্রামের মনিরার স্বামী। ঘাতক দা দিয়ে কোপানোর পর ঘঁটনাস্থলের এক গাছে উঠে বসে থাকে।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাত নয় টায় উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রামে। ঘাতক মিন্টু মিয়া পার্শ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের হাই উদ্দিনের ছেলে।দাম্পত্য কলহের জের ধরে লোমহর্ষক এ ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। শুক্রবার ভোরে ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় একযুগ আগে গেরামারা গ্রামের মিন্টু মিয়ার সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরার। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর দেড় লাখ টাকা যৌতুক দেয় মনিরার বাবা মনু মিয়া। এরপর আরো যৌতুকের দাবিতে মনিরাকে মাঝে মধ্যে মারপিট করতো তার স্বামী। এ নিয়ে কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ হয়েছে। অবশেষে অত্যচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়ি আসে মনিরা। তাদের দাম্পত্যে কলহের জের ধরে মিন্টু মিয়া বৃহস্পতিবার রাত নয় টার দিকে বোরকা পড়ে দা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে স্ত্রী মনিরা বেগমকে। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে শ্বাশুরি শেফালী খাতুন, শ্বশুর মনু মিয়া, জ্যাঠা শ্বশুর আলহাজ্ব মো. মাহমুদ, শ্যালক শাহাদত হোসেন ও জ্যাঠা শ্বাশুরি ছালেহা বেগমকে কুপিয়ে গুরতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বকশিগঞ্জ উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্বাশুরি শেফালী বেগম ও জ্যাঠা শ্বশুর আলহাজ্ব মো, মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। আহত মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদত হোসেন ও জ্যাঠা শ্বাশুরি ছাহেরা বেগমকে আশংকাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে মারা যায় মনু মিয়া।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে থানা অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, নিহতদের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে থানায় হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি এ ঘঁনায় আরো কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী।