
পাটগ্রাম সংবাদদাতা, লালমনিরহাট:
বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জসিম উদ্দিন সরদার কর্তৃক শ্রম আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে প্রদানকৃত বুড়িমারী শাখা কমিটির সাংগঠনিক কার্যত্রুম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অভিযোগপত্র দিয়েছে বুড়িমারী স্থলবন্দরে কার্যক্রমরত ৩টি ট্রেড ইউনিয়ন।
ইউনিয়ন ৩টি হলো- বুড়িমারী স্থলবন্দর ও স্টেশন কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন, বুড়িমারী স্থলবন্দর লোড আনলোড লেবার ইউনিয়ন ও বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরস্থ শ্রম ভবনে শ্রম মহাপরিচালক বরাবরে বুড়িমারী স্থলবন্দরের কার্যক্রমরত ৩টি ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরআগে গত ২৭ মে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকলীগের নতুন কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এদিন শ্রমিক নেতা মো. সাজ্জাদকে সভাপতি ও আনোয়ার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. জসিম উদ্দিন সরদার ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি অনুমোদন দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলাস্থ বুড়িমারী ইউনিয়নে অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দর। বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম দপ্তর কতৃর্ক তিনটি শ্রমিক ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রাপ্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ৪২নং আইনের ২০২(২) ধারা অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। শ্রম আইন অনুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিকদের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ট্রেড ইউনিয়ন'ই স্থানীয় প্রতিনিধিত্বকারী। বুড়িমারী স্থল বন্দরের কোন শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ এর কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন বা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর অন্তর্ভুক্ত নয়। স্বাভাবিক কারণেই কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন বুড়িমারীতে কোন প্রকার শাখা কমিটি দেওয়ার আইনগত অধিকার রাখে না। শ্রম আইনের ২০৩ (২) ধারা অনুযায়ী কোন ফেডারেশন কেবলমাত্র সেই প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করিবে, যে প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানপুঞ্জে উহার কোন সদস্য ট্রেড ইউনিয়ন যৌথ দরকষাকষি হিসাবে আছে। শ্রম আইন মতে নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া কোন ব্যক্তি কখনোই কোন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সদস্য হতে পারে না।
পত্রে আরও বলা হয়, যেহেতু বুড়িমারী স্থলবন্দরের কোন ট্রেড ইউনিয়ন বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত বা সদস্য নয় তাই স্বাভাবিক কারণে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ শ্রম আইন মোতাবেক বুড়িমারী স্থলবন্দরে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারে না বা কোন শাখা কমিটি অনুমোদন দিতে পারে না। কিন্তু তারা শ্রম আইন লঙ্ঘন করে গত ১০ মে বুড়িমারী স্থলবন্দরে একটি শাখা কমিটি অনুমোদন দেওয়ার কারণে বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বুড়িমারীর আলোচিত জুয়েল হত্যার আসামী ও তার সহযোগী শামসুল হুদা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে গ্রেনেড হামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী। একাধিক মামলার আসামী ও সরকার বিরোধীদের দিয়ে দেওয়া এ কমিটির কারনে যেকোন সময় বুড়িমারী স্থলবন্দরে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক ফেডারেশন একই ধরনের দুইটি ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি জসিম উদ্দিন সরদার ২০০৮ সালেও বুড়িমারী স্থলবন্দরে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক ফেডারেশনের নামে শ্রমিকদের মাঝে টাকার বিনিময়ে পরিচয়পত্র বিতরণ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। তখন ব্যর্থ হয়ে তিনিই আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।
অভিযোগপত্রে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সাধারণ শ্রমিকদের স্বার্থে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগ কতৃর্ক বুড়িমারী স্থলবন্দরে অনুমোদন দেওয়া শাখা কমিটির কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানানো হয়।