
মেহেদী হাসান:
রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সবুজবাগ থানার বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা জেলা দড়্গণি শাখা হেযবুত তওহীদ। গতকাল শুক্রবার বাদ আসর শুরম্ন হয়ে অনুষ্ঠান চলে ইফতারের সময় পর্যন্ত।
ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এবং এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় তিনি উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।
এসময় তিনি দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান এই সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি এবং এ থেকে উত্তরণের পথ সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, আলস্নাহ আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীতে তার খলিফা তথা প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণের উদ্দেশ্যে। আলস্নাহর খলিফা হিসেবে আদম তথা মানুষের প্রধান দায়িত্বই হচ্ছে পৃথিবীকে ন্যায়, সুবিচার দ্বারা পরিচালিত করা অর্থাৎ শাšিত্ম প্রতিষ্ঠা করা। আর এই শাšিত্ম কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে সেই দিক-নির্দেশনাও যুগে যুগে তিনি তার নবী-রসুলদের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। মানবসমাজ যখন আলস্নাহর পাঠানো সত্যদীনকে গ্রহণ করে নিয়েছে, সামষ্টিক জীবনে প্রতিষ্ঠা করেছে তখন তার অবধারিত ফল হিসেবে সমাজে শাšিত্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্যই এ দীনের নাম ইসলাম অর্থাৎ শাšিত্ম।
হেযবুত তওহীদের এই নেতা এসময় বলেন, শেষ নবীকে আলস্নাহ পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন সম¯ত্ম পৃথিবীতে শাšিত্ম প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে। যেহেতু একা ও এক জীবনে এই কাজ সম্ভব নয় তাই তিনি সারা জীবনের প্রচেষ্টায় একটি জাতি গঠন করলেন। সেই জাতির নাম উম্মতে মোহাম্মদী। আলস্নাহর রসুল চলে যাওয়ার পর এই উম্মাত তার নেতার সঠিক দিক-নির্দেশনা মোতাবেক যতদিন সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে গেছে ততদিন আলস্নাহ তার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক তাদেরকে বিজয় দিয়েছেন। কিন্তু রসুলের আসহাবরা একে একে চলে যাওয়ার পর পরবর্তী প্রজন্ম তাদের লক্ষ্য থেকে সরে যেতে শুরম্ন করে। ফলে দীনের মধ্যে বিকৃতি প্রবেশ করতে শুরম্ন করে। এক সময় তারা সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত আমল নিয়ে ব্য¯ত্ম হয়ে পড়ে। আর তখন আলস্নাহ তার ঘোষণা মোতাবেক এ জাতিকে শা¯িত্ম প্রদান করেন, তাদেরকে ইউরোপের ড়্গুদ্র ড়্গুদ্র জাতির গোলাম বানিয়ে দেন। সেই গোলামি আমরা আজও করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আজকে পৃথিবীময় ১৬০ কোটি মুসলিম। তাদের হাতে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ। তাদের নামাজ-রোজা ইত্যাদি আমলে কোনো ঘাটতি নেই। অথচ মুসলিম জাতি গত কয়েকশ বছর ধরে লাঞ্ছনাময় জীবনযাপন করছে। যাদের দায়িত্ব ছিল সারা পৃথিবীতে শাšিত্ম প্রতিষ্ঠা তারা এখন সবচেয়ে বেশি অশাšিত্মতে নিপতিত। এই দুর্দশা ঘুচাতে হলে আজকের মুসলিম জাতিকে সর্বপ্রথম তওহীদ অর্থাৎ আলস্নাহর হুকুম তথা ন্যায়-সত্য আর হকের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যায়, অবিচার, মিথ্যা, দালালতের বিরম্নদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জেহাদ অর্থাৎ আপ্রাণ প্রচেষ্টা করতে হবে। রাজনৈতিক দল, ফেরকা, মাজহাব ইত্যাদি যাবতীয় অনৈক্য ঘুচিয়ে তাদেরকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর হেযবুত তওহীদ সেই ঐক্যের ডাকই দিয়ে যাচ্ছে, বলেন হেযবুত তওহীদের এ নেতা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন রব্বানী, মতিঝিল জোনের সভাপতি মো. মেজবাউল ইসলাম, তেজগাঁও জোনের সভাপতি আরাফাতুর রহমান, যাত্রাবড়ী জোনের সভাপতি অলিউলস্নাহ্ খাঁন, লালবাগ জোনের সভাপতি হাসিবুর রহমান, রমনা জোনের সভাপতি রমজান আলী, কেরাণীগঞ্জ থানার সভাপতি সোহেল আহম্মেদ।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরম্ন হয়ে ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পর প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক জনাব সাইফুর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শফিকুল আলম উখবাহ্, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিভাগের সদস্য রাকীব আল হাসান প্রমুখ।